জামালপুর যাইতে সকলে দেখেন—প্রায় অৰ্দ্ধ ক্রোশ আন্দাজ একটি স্থান লৌহরেল দ্বারা পরিবেষ্টন করা বুহিয়াছে। তাহার মধ্যে অনেকগুলি অট্টালিকা শ্রেণী ; অট্টালিকা শ্রেণীর মধ্যে মধ্যে গগনস্পশী এক একটি ইষ্টকনির্মিত চিমনী দিয়া অনর্গল ধুম নির্গত হইয়া স্থানটিকে অন্ধকার করিয়া রাখিয়াছে। উপ একদৃষ্টি ই করিয়া যেমন সেই দিকে চাহিতেছিল, আমি পাথুরে কয়লার কুঁচো আসিয়া তাহার চক্ষের মধ্যে প্রবেশ করিল। সে দ্রুতগতি ব্যাগ ফেলিয়া হস্তে চক্ষু বুগড়াইতে লাগিল। নারা । বরুণ ! এ-স্থানটি কি ? বরুণ । রেলওয়ে ওয়ার্কসপ। এই ওয়ার্কসপে হাজার হাজার লোক প্রতিদিন প্রতিপালিত হইতেছে। ওয়ার্কসপের মধ্যে নানাপ্রকার আশ্চৰ্য্য কল চলিতেছে । নারা । ওয়ার্কসপ দেখতে পাওয়া যায় না ? বরুণ। যায় ; আমি একদিন সকলকে লইয়া গিয়া দেখাইয়া আনিব। ক্রমে সকলে যাইয়া সা-ফ্রেণ্ড কোম্পানীর দোকানের নিকট উপস্থিত হইলেন । দেবগণ দেখেন – দোকানঘরে বসিয়া কতকগুলি সাহেব “ফটাস ফটাস" শব্দে বোতলের কর্ক খুলিয়া লেমনেড পান করিতেছেন। পথে রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশবিস্কুটের বাক্স হাতে করিয়া উমেশ কেরাণীর সহিত গল্প করিতেছেন এবং কহিতেছেন–র্তাহার মুখে কোন দ্রব্যাদি ভাল না লাগায় রেলওয়ে ডাক্তারেরা বিলাতী বিস্কুট ভোজনের ব্যবস্থা দিয়াছেন । উপবীতধারী বিদ্যাবাগীশ হিন্দুসমাজে থাকিয়া অখাদ্য ভোজনেও সমাজমধ্যে স্থান পাইতেছেন দেখিয়া দেবগণ অবাক হইলেন। তখন ব্ৰক্ষা কহিলেন “বক্ষণ ! এ কি ! শিক্ষিত সম্প্রদায়ের বিশেষতঃ বিস্তাবাগীশ ও ন্যায়রত্ব প্রভৃতির যখন এই কাজ, তখন না জানি আমার অশিক্ষিত হিন্দুসস্তানের কি না করিতেছে। আমি দেখিতেছি, আমার স্বষ্টি রাখিবার আর আবশ্বকতা নাই। চল—ম্বর্গে গিয়া ইহার প্রতিবিধান করি।” ইন্দ্র । এ দোকান কাহার ? বরুণ। কলিকাতার প্রসিদ্ধ গৌরমোহন সা নামক এক ব্যক্তির। গৌরমোহন সার নিজ কলিকাতায় এবং অন্যান্ত স্থানে অনেকগুলি দোকান আছে। জামালপুরে এই দোকানটি ভিন্ন তাহার কতকগুলি ভাড়াটে বাট আছে। তন্মধ্যে একটি বাটীর দোতলা আমরা বাসের জন্য ভাড়া করেছি।
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/১৭৯
অবয়ব