দেবগণের মর্তো আগমন করিয়া রোগীর পথ্যাদিবিষয়ে সচরাচর যে সকল প্রথা অবলম্বন করেন, তাহা আমাদিগের পক্ষে অতিশয় অনিষ্টকর।” এই সময়ে সিভিলিয়ান গেডিস সাহেব সন্ত্রীক তাহাকে সৰ্ব্বদা দেখিতে আসিতেন। এক দিন বৈকালে দ্বারকানাথ মিঃ গেডিসকে বলেন, “মানবধৰ্ম্মশাস্ত্র প্রণেতা মহাত্মা মকুর মতে নৈতিক, মানসিক ও শারীরিক উন্নতি ব্যতীত আত্মপৰ্য্যবেক্ষণ অঙ্কুষ্ঠিত হইতে পারে না । *** আমি যে এতদূর শারীরিক কষ্ট সম্ভ করিতেছি, তাহ কেবল সেই নিয়মাবলী উল্লঙ্ঘনের বিষময় ফল । যদি এ যাত্রা রক্ষণ পাই, তাহা হইলে আমি হিন্দুজীবন অবলম্বন করিব।” উল্লিখিত কথাগুলি বলিয়া পণ্ডিতপ্রবর মোক্ষমূলর ভট্টাচাৰ্য্য, ঐতিহাসিক বৃহস্তপ্রণেতা মহাত্মা রামদাস সেনকে যে পত্র লিখিয়াছিলেন, দ্বারকানাথ তাহার মন্মর্থি সাহেবকে বিদিত করেন। উক্ত পত্রের স্কুল তাৎপৰ্য্য এই— “ইউরোপে যাহা কিছু ভাল আছে গ্রহণ কর, তাই বলিয়া ইউরোপীয় হইও না ; তোমরা—মন্থর বংশধর, রত্নপ্ৰসবিনী ভারতভূমির সন্তান, সত্যান্থসন্ধিৎস্থ –সকলেই যে অজ্ঞাত ঈশ্বরের পূজা করে, ন্যায়পরায়ণতা ও সাধুতা সহকারে সকলেই যাহার তুষ্টিসাধনে তৎপর, সেই ঈশ্বরের উপাসক-তোমরা যাহা আছ, তাহাই থাক।” ১৮৭৪ খৃষ্টাৰে ১৬ই ফেব্রুয়ারি বেলা ১টার সময় দ্বারকানাথ জন্মভূমি দেখিবার জন্ত যাত্রা করেন। মৃত্যুর দুই দিবস পূৰ্ব্বে তিনি কীৰ্ত্তন শুনিবার অভিলাষ প্রকাশ করেন এবং দুই ঘণ্টাকাল অভিনিবিষ্টচিত্তে ও তন্ময়মনে হরিনামামৃতপূর্ণ মধুর গান শ্রবণ করেন। মৃত্যুর দিবস প্রাতঃকালে তাহাকে অপেক্ষাকৃত মুস্থ বলিয়া বোধ হয় এবং সে দিবস তিনি বারান্দায় একবার পদচালনাও করেন। ১৮৭৪ খৃষ্টাব্দে ২৫শে ফেব্রুয়ারি বেলা ৪ ঘটিকার সময় স্বারকানাথ মানবদেহ পরিত্যাগ করেন । র্তাহার অকালমৃত্যুতে ভারতাকাশ হইতে একটি অত্যুজ্জল তারকা খসিল । স্বারকানাথ “হিন্দু ফ্যামিলি একুইটি ফণ্ডের” ট্রাষ্টি ও কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ছিলেন। মৃত্যুকালে দ্বারকানাথ বৃদ্ধ মাতা, কোমল হৃদয়া প্রণয়িনী ও দুই পুত্র এবং এককস্তা রাখিয়া যান। দেবগণ এখান হইতে চলিলেন । যাইতে যাইতে বরুণ কহিলেন, “দেবরাজ । হাইকোটের চতুষ্পার্থে উকীলপাড়ায় বিস্তর উকীল বাস করেন।” নারা । উকীলের হাইকোটের সন্নিকটে বাস করেন কেন ? 8\9●