সরলপথ হল তীর্থ-ভ্ৰমণ কথা। কিন্তু যুগের transition-এর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ধর্ম চিন্তারও নানান বিচিত্র বিশ্লেষণ শুরু হল । কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর ভোর বেলাতেই জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেল সবখানে। ধর্মের গুমোট অন্ধকারে ভক্তির নামে চোখ বুজে থাকতে চাইলেন না সবাই । জানার আগ্রহ থেকে বাড়ল ভ্রমণ বিলাসিত। বিলাত ভ্রমণের আধুনিকতা সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কারকে পরাস্ত করল সবিক্রমে। রমেশচন্দ্র দত্ত ( ইংলণ্ডে তিন বৎসর ), শিবনাথ শাস্ত্রী ( ইংলগুের ডায়েরী), রামদাস সেন ( বাঙালীর যুরোপ দর্শন ), গিরিশচন্দ্র বস্থ ( বিলাতের পত্র ), প্রমথ নাথ বস্থ ( ইংলণ্ডের নকশা ও ফ্রান্স ভ্রমণ ) এমন কি রবীন্দ্রনাথও বিলাত ভ্রমণ-কাহিনী লিখলেন গ্রন্থে অথবা চিঠিতে । সেই সঙ্গে মিশর ভ্রমণ-কাহিনী লিখলেন শু্যামনাথ মিত্র ( মিশরের পথে বাঙালী ), ভূ-প্রদক্ষিণ করলেন চন্দ্রশেখর সেন । স্ত্রী স্বাধীনতার শুরু ও স্ত্রীশিক্ষার প্রসার হয়েছে এরই সঙ্গে । আৰ্ষ্যাবর্ত ভ্রমণ-কাহিনী লিখলেন প্রসন্ধময়ী দেবী । ভারতবর্ষের প্রতীচী দিগ্বিহার লিখলেন কেদারনাথ দাস, দক্ষিণাপথ ভ্রমণকাহিনী লিখলেন শরচ্চন্দ্র শাস্ত্রী । সঞ্জীবচন্দ্র পালামৌ, বোম্বাই চিত্র লিখলেন রবীন্দ্রনাথের মেজদা সত্যেন্দ্রনাথ। চল্লিশ বৎসর পূর্বে বঙ্গদেশ ভ্রমণ, গৌড় ভ্রমণ-কাহিনী লিখলেন রাজনারায়ণ বস্থ * শিক্ষিত বাঙালী পাঠক ক্রমশ ভ্রমণ-কাহিনী থেকে ধর্মের জাজু সরিয়ে নিতে থাকলেন । জ্ঞানের অালো যত ছড়াতে থাকল ধর্মান্ধতা ততই হ্রাস পেতে থাকল। কিন্তু বয়স্ক পাঠকের ধর্মপ্রীতিও মূছে যাবার নয়। তিব্বত ভ্রমণ ( শরচ্চন্দ্র দাস ), অমরনাথ ভ্রমণকাহিনী ( সারদা প্রসাদ ভট্টাচাৰ্য্য ) ইত্যাদির রেওয়াজ ভারতবর্ষ-সম্পাদক জলধর সেন সেদিনও টেনে এনেছিলেন হিমালয় ভ্রমণ-কাহিনীতে। বটতলা তাই ধর্মের নামে উচ্ছুণ্ড্য করার পুরনো ট্র্যাডিশন ভোলে নি । এই ধর্মান্ধতাকে ভুলে বাবার বাধ্যতামূলক ‘জন্তমনস্কতা নিয়ে এক অদ্ভূত দোটানায় পড়লেন সেদিনের বাঙালী পাঠকেরা । তীর্থ ভ্রমণের দুর্বলতাকে জোর করে পাশ কাটিয়ে জ্ঞানী পাঠক সমকালীন কলকাতার সামাজিক বিবর্তনের ইতিহাসে নজর দিলেন বেশি করে । কিন্তু সাধারণ
- বিলেত ভ্রমণের কাহিনী লিখলেন রাজকুমারী দেবী ( ইংলণ্ডের বঙ্গ বধু) এছাড়া রয়েছে জানকীনাথ বসাক (মণিপুর প্রহেলিকা), ঈশ্বরচন্দ্র বাগচী ( তীর্থ মূকুর ), তিব্বত ভ্রমণ (শরৎচন্দ্র দাস )
У о