পাতা:দেবতার দান - জলধর সেন.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবতার দান শিরোমণি মহাশয়ের বয়স সত্তর কি পচাত্তর হইবে। এই বয়সেও তাহার শরীরটা বেশ নীরোগ বলিষ্ঠ ; দাত একটিও পড়ে নাই, মাথাটী পাকিয়া তুষার শুভ্ৰ হইয়া গিয়াছে—তবু সৰ্বাঙ্গে পুণ্যের ও স্বাস্থ্যের একটা তরল জ্যোতিঃ সৰ্ব্বদা বিছুরিত হইতেছে। গৃহিণী ঠাকুরাণীর দেহেও পূর্ণ স্বাস্থ্য বিদ্যমান, চুল একটীও পাকে নাই, দাত একটাও নড়ে নাই, সিথিভরা সিন্দূরের মোটা বেখা দপদপা করিয়া জলিতেছে,-গৃহিণীর হাতের শাখা জোড়া একেবারে হাত দুখানি জুড়িয়া বসিয়াছে, লক্ষ্মীর প্রসাদ নিৰ্ম্মালা যেন দেবীর দেহে ভাসিয়া বেড়াইতেছে, দেখিলে ভক্তি শ্রদ্ধায় হৃদয় ভরিয়া উঠে । শিরোমণি মহাশয়ের পরিবারে সকলেই সুখী, সকলেই “গৃহ দেবতার' প্ৰসাদে ও আশীৰ্ব্বাদে নিজেদের জীবন সর্বদা পূত ও রক্ষিত মনে করিয়া স্বচ্ছন্দচিত্তে সংসার করিতেছেন। তবে একটা দুঃখ এই পরিবারের প্রায় সকলের মনেই আল্লাধিক পরিমাণে ছিল, তাহা অন্য কিছু নহে, শিরোমণি মহাশয়ের অভাবে এক্ট সাত পুরুষের পণ্ডিতের বাড়ীটা পড়ুয়া শূন্য হইবে। তায় হায় তপন শুধু এই বাড়ীটার কেন এই গ্রামের শ্ৰীটাই বা কেমন ‘বিতিকিচ্ছি’ দেখাইবে, কথাটা ভাবিয়া শিরোমণি মহাশয় অনেক সময় অশ্রুবিসর্জন করিতেন। গ্রামের ও কেহ কেহ এই নিয়া অনেক সময় আলোচনা কিরিত। সর্বাপেক্ষ এই ব্যথাটা গ্রামের মধ্যে বেশী করিয়া লাগিত, রামগোপাল ঘোষকে ।