পাতা:দেববাণী - স্বামী বিবেকানন্দ.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেববাণী । উপদেশ দানের বিরাম ছিল না, কিন্তু অদ্যাকার উপদেশের কোন প্ৰকার “নোটু” রাখা হয় নাই। তবে বাহির হইবার পূর্বে প্ৰান্তরাশের সময় তিনি এই কয়েকটা কথা বলিয়াছিলেন :-) সর্বপ্রকার অন্নের জন্য ভগবানের প্রতি কৃতজ্ঞ হও--অম্নই ব্ৰহ্মস্বরূপ । তঁর সর্বব্যাপিনী শক্তিই আমাদের ব্যষ্টিশক্তিতে পরিণত হয়ে আমাদের সর্বপ্ৰকার কার্য্য করতে সাহায্য করে থাকে । ২৯শে জুন, শনিবার । ( অদ্য স্বামিজী গীতা হস্তে লইয়া উপস্থিত হইলেন । ) গীতায় হৃষীকেশ অর্থাৎ ইন্দিয় বা ইন্দ্ৰিয়যুক্ত জীবাত্মাগণের ঈশ্বর গুড়াকেশ অর্থাৎ নিদ্রার অধীশ্বর বাম নিদ্রাজিয়ী অৰ্জ্জুনকে উপদেশ দিচ্ছেন। এই জগৎই ‘ধৰ্ম্মক্ষেত্ৰ’ কুরুক্ষেত্র । পঞ্চপাণ্ডব ( অর্থাৎ ধৰ্ম্ম } শত কৌরবের ( আমরা যে সকল বিষয়ে আসক্ত এবং যাদের সঙ্গে আমাদের সতত বিরোধ তাদের ) সহিত যুদ্ধ করছেন । পঞ্চপাণ্ডবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বীর অৰ্জ্জুন ( অর্থাৎ প্ৰবুদ্ধ জীবাত্মা ) সেনাপতি । আমাদের সমুদয় ইন্দ্ৰিয়সুখের সঙ্গে-যে সকল বস্তুতে আমরা অতিশয় আসক্ত তাদের সঙ্গে-যুদ্ধ করতে হবে, তাদের মেরে - ফেলতে হবে । আমাদের নিঃসঙ্গ হয়ে দাড়িয়ে থাকতে হবে। এ আমরা ব্ৰহ্মস্বরূপ, আমাদের আর সমস্ত ভাবকে এই ভাবে ডুবিয়ে দিতে হবে। শ্ৰীকৃষ্ণ সব কাজই করেছিলেন, কিন্তু সৰ্ব্বপ্রকার আসক্তিবিজ্জিত হয়ে । তিনি সংসারে ছিলেন বটে, কিন্তু কখন সংসারী হয়ে যান নি। সকল কাস্থ্যকর, কিন্তু অনাসক্ত হয়ে কর ; কাজের জন্যই কাজ কর, নিজের জন্য কখনও করে না ।