বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম খণ্ড-ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ २s ব্রজ। চরকা ভেঙ্গেছে ব’লে ? নয়ানকে বলে দেব—সে যেন একটা চরকা ভেঙ্গে দেয় । ব্ৰহ্ম হা—সাগরে, আর নয়ানে ! যা যা ! ব্রজ। গেলে বাগিনী দেখতে পাব ? ব্ৰহ্ম। বুড়ীর কথাটাই শোন না ; কি জ্বালাতেই পড়লেম গা ? আমার মালা জপা হলো না। তোর ঠাকুরদাদার তেষট্রিট বিয়ে ছিল—কিন্তু চোঁদ বছরই হোকৃ—আর চুয়াত্তর বছরই হোকৃ—কই, কেউ ডাক্‌লে ত কখন ‘না বলিত না । ব্রজ। ঠাকুরদাদার অক্ষয় স্বর্গ হৌকৃ—আমি চৌদ্দ বছরের সন্ধানে চলিলাম। ফিরিয়া আসিয়া চুয়াত্তর বছরের সন্ধান লইব কি ? ব্রহ্ম। যা যা যা! আমার মালা জপা ঘুরে গেল । আমি নয়নতারাকে বলে দিব, তুই বড় চেঙ্গড়া হয়েছিস্ । ব্রজ। বলে দিও। খুসী হয়ে দুটাে ছোলাভাজা পাঠিয়ে দেবে। এই বলিয়া ব্রজেশ্বর সাগরের সন্ধানে প্রস্থান করিলেন । ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ সাগর শ্বশুরবাড়ী আসিয়া দুইটি ঘর পাইয়াছিল, একটি নীচে, একটি উপরে। নীচের ঘরে বসিয়া সাগর পান সাজিত, সমবয়স্কদিগের সঙ্গে খেলা করিত, কি গল্প করিত। উপরের ঘরে রাত্রে শুইত ; দিনমানে নিদ্রা আসিলে সেই ঘরে গিয়া দ্বার দিত। অতএব ব্রজেশ্বর, ব্ৰহ্মঠাকবাণীল উপকথার জ্বালা এড়াইয়া সেই উপরের ঘরে গেলেন । সেখানে সাগর নাই—কিন্তু তাহার পরিবৰ্ত্তে আর এক জন কে আছে। অনুভবে বুঝিলেন, এই সেই প্রথম স্ত্রী । - বড় গোল বাধিল । দুই জনে সম্বন্ধ বড় নিকট—স্ত্রী পুরুষ—পরস্পরের অৰ্দ্ধাঙ্গ, পৃথিবীর মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ। কিন্তু কখনও দেখা নাই। কখনও কথা নাই। কি বলিয়া কথা আরম্ভ হইবে ? কে আগে কথা কহিবে ? বিশেষ এক জন তাড়াইতে আসিয়াছে, আর এক জন তাড়া খাইতে আসিয়াছে। আমরা প্রাচীন পাঠিকাদিগকে জিজ্ঞাসা করি, কথাটা কি রকমে আরম্ভ হওয়া উচিত ছিল ? উচিত যাই হউক—উচিতমত কিছুই হইল না। প্রথমে দুই জনের একজনও o