পাতা:দেশবন্ধু-কথা - জিতেন্দ্রলাল বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88 দেশবন্ধু-কথা “কিশোর-কিশোরী’ ও ‘অন্তর্যামী’ পূর্বে আমার খুবই ভাল লাগিয়াছিল ; কিন্তু সে দিন বোধ হইয়াছিল, ভক্ত সাধক ব্যতীত অন্যের লেখনী হইতে এমন পীযুষধারা নিৰ্গত হইতে পারে না । সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনাইয়া আসিবার পূর্বেই বই দুইখানি সমাপ্ত হইল। কবি চিত্তরঞ্জনের সৌম্য আনন, প্ৰতিভা-দীপ্ত ললাট ও শান্ত নয়নে সে দিন যে পরিতৃপ্ত শান্তির আলো দেখিয়াছিলাম, তাহা কখনও ভুলিব না। ভাবের আতিশয্যে মাঝে মাঝে তাহার কণ্ঠ ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিয়াছিল। তখনই বুঝিয়াছিলাম, তিনি যে সত্যের সন্ধানে ঘুরিতেছিলেন, তাতার শুধু সন্ধানই পান নাই, জীবনে তিনি সে সত্যের উপলব্ধি করিয়াছেন । বৈসংব চিত্তরঞ্জন চণ্ডিদাসের মতই চির-ভাস্বর, নিত্য প্রেম ও আনন্দময় রাজ্যের প্ৰেমিক সম্রাটের সান্নিধ্য লাভ করিয়া পবিত্ৰ হইয়াছেন । ভূত্য অভ্যাসমত মাঝে মাঝে কলিকা বদলাইয়া দিয়া যাইতেছিল ; কিন্তু তাম্রকুটসেবনানুরাগী চিত্তরঞ্জনের সে দিকে খেয়ালই ছিল না। প্ৰকৃত কবি, ভক্ত ও প্রেমিক না হইলে এমন বাহ্যচেতনাশূন্য হওয়া যায় না। তখন তাহার কাছে বোধ হয় সংসারের আর সকল বিষয়ই লুপ্ত হইয়া গিয়াছিল। তিনি যখনই যাহা করিতেন, এমনই আত্মবিস্মৃত হইয়া কায়মনঃপ্ৰাণে তাহাতে নিমগ্ন হইয়া যাইতেন। চারিদিকে দৃষ্টি রাখিয়া, লাভলোকসান খাতাইয়া সাধারণ মানুষের মত কোন কাজই তিনি করিতে পারিতেন না । এইখানেই তাহার বিরাট বৈশিষ্ট্য। শ্ৰীসরোজনাথ ঘোষ ।