পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
ধুস্তুরী মায়া

তাঁর নিজের জন্য এল খান কতক মোটা রুটি, কিছু সিদ্ধ তরকারি, কিছু কাঁচা তরকারি, আর এক বাটি দুধ।

 অক্রূরবাবু বললেন, কোনও জন্তু ক্যালরি প্রোটিন ভাইটামিন নিয়ে মাথা ঘামায় না। আমাদের গুহাবাসী পূর্বপুরুষেরা জন্তুর মতনই কাঁচা জিনিস খেতেন, তাতেই তাঁদের পুষ্টি হত। সভ্য হয়ে সেই সদভ্যাস আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এখন কাঁচা লাউ কুমড়ো অনেকেই হজম করতে পারে না, তাই আপনাকে দিই নি। আমি কিন্তু কাঁচা খাওয়া অভ্যাস করেছি, একটু একটু করে ঘাস খেতেও শিখছি। যাক ও কথা। আপনার মুখের ভাব দেখে মনে হচ্ছে একটা প্রশ্ন আপনার কণ্ঠাগত হয়ে আছে। চক্ষুলজ্জা করবেন না, অসংকোচে বলে ফেলুন।

 আমি বললুম, কিছু যদি মনে না করেন তো জিজ্ঞাসা করি আপনি বলেছেন যে বিবাহের জন্য ঢের চেষ্টা করেছেন, কিন্তু হয়ে ওঠে নি। কেন হয়ে ওঠে নি বলবেন কি?

 —আরে সেই কথা বলতেই তো আপনাকে ডেকে এনেছি। শুনুন। দাম্পত্য হচ্ছে তিন রকম। এক নম্বর, যাতে স্বামীর বশে স্ত্রী চলে, যেমন গান্ধী-কস্তুরবা। দু নম্বর, যাতে স্বামীই হচ্ছে স্ত্রীর বশ, অর্থাৎ স্ত্রৈণ ভেড়ো বা হেনপেক, যেমন জাহাঙ্গির-নুরজাহান। দুটোই হল ডিক্টেটারী ব্যবস্থা, কিন্তু দুক্ষেত্রেই দম্পতি সুখী হয়। তিন নম্বর হচ্ছে, যাতে স্বামী-স্ত্রী কিছুমাত্র রফা না করে নিজের নিজের মতে চলে, অর্থাৎ দুজনেই একগুঁয়ে। এই হল ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য-মূলক আদর্শ দাম্পত্য-সম্বন্ধ, কিন্তু এর পদ্ধতি বা টেকনিক লোকে এখনও আয়ত্ত করতে পারে নি।

 —আপনি নিজে কি রকম দাম্পত্য পছন্দ করেন?

 —তিন রকমেরই চেষ্টা করেছি, কিন্তু এ পর্যন্ত কোনওটাই