পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অক্রূরসংবাদ
৯৭

বিদেয় করব। খোরপোশ দেব, কিন্তু আমার সম্পত্তি সে পাবে না। এই কথা শুনে সব ভেগে পড়ল। জ্ঞাতিশত্রুরাও রটাতে লাগল যে আমি একটা উন্মাদ। কিন্তু একটি মেয়ে সত্যিই রাজী হয়েছিল। অত্যন্ত গরিবের মেয়ে, দেখতেও তেমন ভাল নয়। আমার সমস্ত কথা মন দিয়ে শুনে তখনই বললে যে সে রাজী। আমি বললুম, অত তাড়াতাড়ি নয়, তোমার বাপ মায়ের মত নিয়ে জানিও। পরদিন খবর এল বাপ-মাও খুব রাজী। আমার সন্দেহ হল। খোঁজ নিয়ে জানলুম, রূপ আর টাকার অভাবে তার পাত্র জুটছে না। বাপ মা অত্যন্ত সেকেলে, মেয়েকে কেবল অভিশাপ দেয়। এখন সে শরৎ চাটুজ্যের অরক্ষণীয়ার মতন মরিয়া হয়ে উঠেছে, নির্বিচারে যার-তার কাছে নিজেকে বলি দিতে প্রস্তুত। মেয়ের বাপের সঙ্গে দেখা করে আমি বললুম, আপনার মেয়ে শুধু আপনাকে কন্যাদায় থেকে উদ্ধার করবার জন্যই আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছে, আমার শর্তগুলো মোটেই বিচার করে দেখে নি। এমন বিয়ে হতে পারে না। এই নিন পাঁচ হাজার টাকা, আমি যৌতুক দিলুম, মেয়েকে আপনাদের পছন্দ মত ঘরে বিয়ে দিন। বাপ খুব কৃতজ্ঞ হয়ে বললে, আপনিই খুকীর যথার্থ পিতা, আমি জন্মদাতা মাত্র। মেয়েটি ভাল ঘরেই পড়েছিল, বিয়ের পর বরের সঙ্গে আমাকে প্রণাম করতে এসেছিল।

 আমি বললুম, আপনি মহাপ্রাণ দয়ালু ব্যক্তি।

 —তা মাঝে মাঝে দয়ালু হতে হয়, টাকা থাকলে দান করায় বাহাদরি কিছু নেই। তার পর শুনুন। আমার বয়স বেড়ে চলল, পঁয়ত্রিশ পার হয়ে বুঝলুম আমার আদর্শের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে এমন কৃচ্ছসাধিকা নারী কেউ নেই। তখন আমার একটা মানসিক বিপ্লব হল, যাকে বলে রিভল্‌শন। এক নম্বর