পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অক্রূরসংবাদ
৯৯

দাম্পত্যও আমার সয়ে যেতে পারে, আমার মত আর আদর্শও বদলে যেতে পারে।

 —আপনার পক্ষে তা অসম্ভব মনে করি।

 —আমি কিন্তু চেষ্টার ত্রুটি করি নি। তখন আমার বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে, পুরীতে স্বর্গদ্বারের পুব দিকে নিজের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করাচ্ছি, ওশন-ভিউ হোটেলে আছি। আমার পুরনো সহপাঠী ভূপেন সরকারের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। সে তখন মস্ত গভর্নমেণ্ট অফিসার, ছুটি নিয়ে এসেছে, সঙ্গে আছে তার বোন সত্যভামা সরকার। দুজনে আমার হোটেলেই উঠল। সত্যভামা বিখ্যাত মহিলা, দু বার বিলাত ঘুরে এসেছে, হুণ্ডাগড়ের রানী সাহেবাকে ইংরিজী পড়ায় আর আদব কায়দা শেখায়, অনেক বইও লিখেছে। নাম আগেই শোনা ছিল, এখন আলাপ হল। বয়স আন্দাজ পঁয়ত্রিশ, দশাসই চেহারা, মুখটি গোবদা গোছের, ড্যাবডেবে চোখ, নীচের ঠোঁট একটু বাইরে ঠেলে আছে। দেখলেই বোঝা যায় যে ইনি একজন জবরদস্ত মহীয়সী মহিলা, স্বামীকে বশে রাখবার শক্তি এঁর আছে। ভাবলুম, এই সত্যভামার কাছেই আত্মসমর্পণ করলে ক্ষতি কি। দু দিন মিশেই বঝলুম, আমি যেমন তাকে বাজিয়ে দেখছি, সেও তেমনি আমাকে দেখছে।

 —আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে যেন শিকার কাহিনী শুনছি।

 —কতকটা সেই রকমই বটে। যেন একটা বাঘিনী ওত পেতে আছে, আর একটা বাঘ তার পিছনে ঘুরছে। তার পর একদিন আমার নতুন বাড়ি তদারক করতে গেছি, ভূপেন আর সত্যভামাও সঙ্গে আছে। সত্যভামা বললে, জানেন তো, সমস্ত ইট বেশ করে ভিজিয়ে নেওয়া চাই, আর ঠিক তিন ভাগ সুরকির সঙ্গে এক ভাগ চুন মেশানো চাই, নয়তো গাঁথনি মজবুত হবে না। আমার একটু