পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যদু ডাক্তারের পেশেণ্ট
১১৭

 —না না, ভুতুড়ে নয়। কিন্তু যে কেস-হিস্টরি বলছি তা অতি ভীষণ; অথচ এতে শুধু সার্জারির ক্লাইম্যাক্স নয়, প্রেমেরও পরাকাষ্ঠা পাবে।

 —বাঃ, বিভীষিকা সার্জারি আর প্রেম, এর চাইতে ভাল কম্‌বিনেশন হতেই পারে না। আপনি আরম্ভ করুন সার, আমরা শোনবার জন্য ছটফট করছি।


ডাক্তার যদুনন্দন গড়গড়ি বলতে লাগলেন।— প্রায় পঁয়ত্রিশ বৎসর আগেকার কথা। তখন তোমাদের সাল্‌ফা পেনিসিলিন আর স্ট্রেপ্টো ক্লোরো না টেরা কি বলে গিয়ে—এ সবের রেওয়াজ হয় নি। কারও বাড়িতে অপারেশন হলে আয়োডোফর্মের খোশবায়ে পাড়া সুদ্ধ মাত হয়ে যেত, লোকে বুঝত, হাঁ, চিকিৎসা হচ্ছে বটে। আমি তখন কালীঘাটে বাস করতুম। আমার বাড়ির কাছে এক তান্ত্রিক সিদ্ধপুরুষ থাকতেন, নাম বিঘোরানন্দ, তিনি কামরূপ-কামাখ্যায় আর তিব্বতে বহু বৎসর সাধনা করেছিলেন। ভক্তরা তাঁকে বিঘোর বাবা বা শুধু বাবাঠাকুর বলত। বয়স ষাট-পঁয়ষট্টি, লম্বা চওড়া চেহারা, ঘোর কাল রং, একমুখ দাড়ি-গোঁফ, দেখলেই ভক্তিতে মাথা নীচু হয়ে আসে। আমি তাঁর কার্বংকল অপারেশন করেছিলুম। একটু চাঙ্গা হবার পর তিনি একগোছা নোট আমার হাতে দেবার চেষ্টা করলেন। হাত টেনে নিয়ে আমি বললুম, করেন কি, আপনার কাছে কি আমি ফী নিতে পারি? বিঘোর বাবা একটু হেসে বললেন, তুমি না নিলেও ও টাকা তোমার হয়ে গেছে। কথাটার মানে তখন বুঝতে পারি নি, তাঁকে নমস্কার করে বিদায় নিলুম।

 বাড়ি ফিরে এসে পকেটে হাত দিয়ে দেখি একটা ভুর্জপত্রের