পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যদু ডাক্তারের পেশেণ্ট
১১৯

আমাকে দেখে বললেন, এস ডাক্তার। যাক, নিশ্চিন্ত হওয়া গেল, এঁর কোনও ফ্যাসাদ হয় নি। প্রণাম করে জিজ্ঞাসা করলুম, পেশেণ্ট কে? কি হয়েছে? বললেন, ঘরের ভেতরে এস, স্বচক্ষে দেখলেই বুঝবে।

 ঘরটি বেশ বড়, কিন্তু আলো অতি কম, এক কোণে পিলসুজের মাথায় পিদিম জ্বলছে, তাতে কিছুই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। একটু পরে দৃষ্টি খুললে নজরে পড়ল—ঘরের এক পাশে একটা তক্তাপোশ, বোধ হয় বিঘোর বাবা তাতেই শোন। আর এক পাশে মেঝেতে একটা মাদুরের ওপর দুজন পাশাপাশি চিত হয়ে চোখ বুজে শুয়ে আছে, একখানা কম্বল দিয়ে সমস্ত শরীর ঢাকা, শুধু মুখ দুটো বেরিয়ে আছে। একজন পুরুষ, জোয়ান বয়স, বোধ হয় পঁচিশ, মুখে দাড়ি গোঁফ, মাথায় ঝাঁকড়া চুল। আর একজন মেয়ে, বয়স আন্দাজ কুড়ি, কালো কিন্তু সুশ্রী, ঝুঁটি-বাঁধা খোঁপা, সিঁথিতে সিঁদুর।

 জিজ্ঞাসা করলুম, স্বামী-স্ত্রী?

 বিঘোর বাবা উত্তর দিলেন, উঁহু, প্রেমিক-প্রেমিকা।

 —কি হয়েছে?

 —নিজেই দেখ না।

 স্টেথোস্কোপটি গলায় ঝুলিয়ে হেঁট হয়ে কম্বলখানা আস্তে আস্তে সরিয়ে ফেললুম। তার পরেই এক লাফে পিছনে ছিটকে এলুম। কম্বলের নীচে কিচ্ছু নেই, শুধু দুটো মুণ্ডু পাশাপাশি পড়ে আছে।

 ভয়ও হল রাগও হল। বিঘোর বাবাকে বললুম, আমাকে এরকম বিভীষিকা দেখাবার মানে কি? এ তো ক্রিমিন্যাল কেস, যা করতে হয় পুলিস করবে, আমার কিছু করবার নেই। কিন্তু আপনি যে