গলার হাড় আর নলী জুড়বে না। সার্কুলেশন রেস্পিরেশন এবং স্পাইন্যাল কর্ডের সঙ্গে ব্রেনের যোগ কি করে হবে? সেরিব্রেশন অর্থাৎ মস্তিষ্কের ক্রিয়া চলবে কি করে?
—কেন চলবে না? দুই ভুরুর মধ্যে আজ্ঞাচক্র ঘুরছে, তাতেই পঞ্চেন্দ্রিয় আর মনের ক্রিয়া চলছে। কাটা মুণ্ডু কথা কয়েছে তা তো তুমি স্বকর্ণে শুনেছ। কোনও চিন্তা নেই, তুমি সেলাই করে ফেল।
আমি বললুম, সেলাইএর উপযুক্ত বাঁকা ছুঁচ আর ক্যাটগট তো আমার সঙ্গে নেই, আর সেপসিস অর্থাৎ পচ বন্ধ করব কি করে?
—তোমাকে একটা গুনছাঁচ আর সুতলি দড়ি দিচ্ছি। পচবার ভয় নেই, দেখছ না, কাটা জায়গায় গঙ্গামৃত্তিকা লেপন করে দিয়েছি। ওই কাদা সুদ্ধ সেলাই করে দাও।
বড়ই মুশকিলে পড়া গেল। আয়োজন কিছুই নেই, অ্যাসিস্টাণ্ট নেই, নার্স নেই, অপারেশন টেব্ল নেই, আলো পর্যন্ত নেই, অথচ বিঘোরানন্দ আমাকে এমন সার্জারি করতে বলছেন, যা কস্মিন, কালে কোথাও হয় নি—
ক্যাপ্টেন বেণী দত্ত বললেন, হয়েছিল সার—গজানন গণেশ আর অজানন দক্ষ।
—আরে তাঁরা হলেন দেবতা। আচ্ছা বেণী, আজকাল বড় অপারেশনের আগে তোমরা নাকি হরেক রকম টেস্ট করাও?
—আজ্ঞে হাঁ। ব্লাড-প্রেশার, ব্লাড-কাউণ্ট, ব্লাড-শুগার, এক্স-রে ফোটো, কার্ডিওগ্রাম প্রভৃতি মামুলী রুটিন টেস্ট তো আছেই, তা ছাড়া নন-প্রোটিন নাইট্রোজেন, টোটাল হেভি হাইড্রোজেন, বডিফ্যাটের আয়োডিন-ভ্যালু, হাড়ের ইলাস্টিসিটি, দাঁতের রেডিওঅ্যাক্টিভিটি, চামড়ার স্পেক্ট্রোগ্রাম—এসবও দেখা দরকার।