পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যদু ডাক্তারের পেশেণ্ট
১২৩

দিয়েছে। রমাকান্ত বজ্জাত হলেও আমাকে খুব ভক্তি করে, আমার অনেক ফরমাশও খাটে। সে পঞ্চীর ওপর অকথ্য অত্যাচার করত, আমি ধমক দিয়েও কিছু করতে পারি নি। এ রকম ক্ষেত্রে যেমন হয়ে থাকে তাই হল। ওই যে পুরুষটার মুণ্ডু দেখছ, ওর নাম জটিরাম বৈরাগী—তোর দেশের লোক, নয় রে পঞ্চী?

 পঞ্চীর মাথা ওপর নীচে একটু নড়ে উঠে সায় দিলে।

 —এই জটি ছোকরা কীর্তন গায় ভাল, তার জন্য নানা জায়গা থেকে ওর ডাক আসত। জটিরাম মাঝে মাঝে এই গাঁয়ে এলে পঞ্চীর সঙ্গে দেখা করত, শেষটায় দু জনের প্রেম হল।

 পঞ্চীর ভুরু আর ঠোঁট একটু কুঁচকে উঠল।

 বিঘোরানন্দ বলতে লাগলেন—রমাকান্ত টের পেয়ে একদিন পঞ্চীকে বেদম মারলে, কিন্তু তাতে কোনও ফল হল না। তার পর গত কাল রাত একটার সময় আমি ঘুমিয়ে আছি এমন সময় দরজায় ধাক্কা পড়ল। উঠে দরজা খুলে দেখি, রাম-দা হাতে রমাকান্ত। আমার পায়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে বললে, সর্বনাশ করেছি বাবাঠাকুর, এক কোপে দুটোকে সাবাড় করেছি, বাঁচান আমাকে।

 ব্যাপারটা এই।—আগের দিন রমাকান্ত পঞ্চীকে বলেছিল, আমি ভদ্রেশ্বর যাচ্ছি, চৌধুরী বাবুদের লোহার গেট তৈরি করতে হবে, চার-পাঁচ দিন পরে ফিরব, তুই সাবধানে থাকিস। সব মিথ্যে কথা। রাত দুপরে রমাকান্ত চুপি চুপি তার বাড়িতে এল এবং আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকে দেখলে পঞ্চী আর জটিরাম পাশাপাশি শুয়ে ঘুমুচ্ছে। দেখেই রাম-দায়ের এক কোপে দুজনের মুণ্ডু কেটে ফেললে। তার পর ভয় পেয়ে আমার কাছে ছুটে এসেছে।

 আমি তখনই রমাকান্তর সঙ্গে তার বাড়ি গেলুম। প্রথমেই