পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যদু ডাক্তারের পেশেণ্ট
১২৫

অশ্লেষা পড়বে, তার আগেই সেলাই করে ফেল, নইলে জোড় লাগবে না।


গুন-ছুঁচ আর সুতলি নিয়ে আমি সেলাই করতে যাচ্ছি, এমন সময় দেখলুম মুণ্ডু দটো ফিসফিস করে আপসের মধ্যে কথা বলছে। ক্রমশ পঞ্চীর কণ্ঠস্বর চড়া হয়ে উঠল। বিঘোর বাবা ধমক দিয়ে বললেন, এই পঞ্চী, চেঁচাস নি। আরে গেল যা, এখনও ঘাড়ের ওপর মুণ্ডু বসে নি, এর মধ্যেই গলাবাজি শুরু করেছে!

 পঞ্চী ডাকল, অ বাবাঠাকুর, একবারটি শুনুন তো।

 বিঘোর বাবা উবু হয়ে অনেকক্ষণ ধরে কান পেতে পঞ্চী আর জটিরামের কথা শুনলেন। তার পর আমাকে বললেন, ওহে ডাক্তার, এরা বলছে যে জটির ধড়ে পঞ্চীর মুণ্ডু আর পঞ্চীর ধড়ে জটির মুণ্ডু লাগাতে হবে। আমিও ভেবে দেখলুম এই ব্যবস্থাই ভাল।

 স্তম্ভিত হয়ে আমি বললুম, এ কি রকম কথা বাবাঠাকুর! মুণ্ডু বদল হতেই পারে না, ভিয়েনা কনভেনশনে তার কোনও স্যাংশন নেই। এ রকম অপারেশন মোটেই এথিক্যাল নয়, আমাদের প্রোফেশনাল কোডের একদম বাইরে।

 বিঘোর বাবা বললেন, আরে রেখে দাও তোমার কোড। পঞ্চী যদি নিজের ধড় আর মুণ্ডু নিয়ে বেঁচে ওঠে তবে যে আবার রমাকান্তর কবলে পড়বে। মুণ্ডু বদল করলে এদের নব কলেবর হবে, কোনও গোলযোগের ভয় থাকবে না। আর একটা মস্ত লাভ এই হবে যে কখনও এদের ছাড়াছাড়ি হবে না। জটিরাম যদি আগে মরে তবে তার ধড় নিয়ে পঞ্চীর মুণ্ডু বেঁচে থাকবে। পঞ্চী যদি আগে মরে তবে তার ধড়টা জটির মুণ্ডু নিয়ে বেঁচে থাকবে। এই