পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রটন্তীকুমার
১৩৩

 খগেন বললে, অতি চমৎকার হয়েছে, এমন খাবার কোথাও খাই নি।

 উৎফুল্ল হয়ে রুবির মা বললেন, সত্যি? তোমার জন্যে রুবি সমস্ত নিজের হাতে তৈরি করেছে, ওর রান্নার হাত অতি চমৎকার।

 রটাইএর মুখ কচুরিতে বোঝাই, তবু সে চুপ করে থাকতে পারল না, মুখের ডেলাটা এক পাশে ঠেলে রেখে জড়িয়ে জড়িয়ে বললে, বা রে, ওসব তো আমার বড়দি করেছে।

 রুবির মা গর্জন করে বললেন, চুপ কর অসভ্য ছেলে! যা জানিস না তা বলতে আসিস কেন?

 কচুরি-পিণ্ড কোঁত করে গিলে ফেলে রটাই বললে, বাঃ, আমিই তো বাড়ি থেকে সব নিয়ে এলুম।

 রুবির মুখের তিন স্তর গোলাপী প্রলেপ ভেদ করে বেগনী আভা ফুটে উঠল। তার মা রেগে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, পানু, এই হতভাগা হিংসুটে ছোঁড়াটাকে মানিকের পড়বার ঘরে রেখে আয় তো। মিথ্যে কথার ঢেঁকি, ভদ্রসমাজে কখনও মেশে নি, কেবল বড়াই করতে জানে। তখনই বারণ করেছিলুম ওটাকে আনিস নি, তা মান কে তো শুনবে না, ভারী গুণের বন্ধু যে।

 পান্নালাল রটাইএর হাত ধরে হিড়হিড় করে টেনে অন্য ঘরে নিয়ে গিয়ে বললে, তোর তো খাওয়া হয়ে গেছে, এখন বাড়ি যা রটাই।

 রটাই বললে, খাওয়া তো কিছুই হয় নি, এখনও প্যাটি নিমকি বরফি ল্যাংচা আর চা বাকী রয়েছে। খালি হলে টিফিন ক্যারিয়ারটাও তো নিয়ে যেতে হবে।

 —আচ্ছা আচ্ছা, আমি সব এনে দিচ্ছি। তুই এখানে একলাটি বসে চুপচাপ খেয়ে নিবি, তার পর সোজা বাড়ি চলে যাবি, কেমন?

 রটাই ঘাড় নেড়ে জানালে যে তাতেই সে রাজী। অত ধমক