পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রটন্তীকুমার
১৩৯

বাড়ি এসে রটাই বললে, দিদিমণি, মস্ত খবর, খগেনবাবুকে নেমন্তন্ন করেছি, পরশু বিকেলে চা খেতে আসবেন।

 জয়ন্তী বললে, খগেনবাবু আবার কে?

 —ওই যে, আজ যিনি মানিকদের বাড়ি চা খেলেন। তাঁর সঙ্গে আমার খুব ভাব হয়েছে। মস্ত বড় মোটরকার! তোমাকে বেশী কিছু করতে হবে না, শুধু মাছের কচুরি, মটন প্যাটি, ল্যাংড়া আমের ল্যাংচা আর চা।

 জয়ন্তী তার মাকে ডেকে বললে, তোমার খোকার আক্কেল দেখ মা। কথা নেই বার্তা নেই হুট করে কোথাকার কে খগেনবাবু না বগেনবাবুকে নেমন্তন্ন করেছে। আবার আমাকে খাবারের ফরমাশ করছে। খাবার খুব সস্তা, না? তার খরচ তুই দিবি?

 রটাই হাত নেড়ে বললে, সে তুমি কিচ্ছু ভেবো না দিদিমণি, আমি তোমাকে দু টাকা দেব। কিন্তু আজ নয়, সেই পরশর পরে তরশু দিন দেব।

 —তুই টাকা পাবি কোথা থেকে? মানিকের মায়ের কাছ থেকে মুটেভাড়া আদায় করবি নাকি?

 —ধেৎ। তোমাকে সে পরে বলব, এখন বলতে মানা।

 —অচেনা উটকো লোকের জন্য আমি খাবার করতে পারব না।

 —অচেনা কেন হবে, আমার সঙ্গে খুব ভাব হয়ে গেছে যে। তাঁর নিজের মোটরে আমাকে এখানে পৌঁছিয়ে দিয়ে গেলেন।

 —তাতেই কৃতার্থ হয়ে গেছিস বুঝি?

 রটাইএর মা বললেন, তা খোকা যখন নেমন্তন্ন করে ফেলেছে তখন আসুক না খগেনবাবু। কিছু খাবার তৈরি করিস, বাজারের জিনিস দেওয়া তো ভাল দেখাবে না।