—ওহে রটন্তীকুমার, ধৈর্যং রহু ধৈর্যং। আমি যদি লঙ্কেশ্বর রাবণ হতুম তো আল্টিমেটম দিতুম যে তিন দিনের মধ্যে ভাব না করলে তাঁকে কাটলেট বানিয়ে খেয়ে ফেলব। কিন্তু তা তো পারব না। হুড়ো লাগালে তোমার দিদিমণি ভড়কে যাবেন, হয়তো রেগে গিয়ে তাঁর কোনও ক্লাসফ্রেণ্ড তরুণকুমার কি করুণকুমারের সঙ্গেই ভাব করে ফেলবেন। আমিও তখন মরিয়া হয়ে রুবি-দির কাছেই যাব—
তিড়বিড় করে হাত পা ছুঁড়ে রটাই বললে, খবরদার যাবেন না বলছি! বেশ, আরও কিছু দিন দেখুন।
তিন দিন পরে রটাই আবার প্রশ্ন করলে, হল?
খগেন বললে, এইবারে হব হব। তোমার দিদিমণিকে বলেছি, টাকার জন্য ভাবছ কেন, ও তো বাবার টাকা। আমার হাতে এলে তিন দিনে ফুঁকে দেব। যদি মামুলী উপায় পছন্দ না কর তবে হাসপাতাল আছে, ইস্কুল কলেজ আছে, রামকৃষ্ণ মিশন গৌড়ীয় মঠ আছে, হরেক রকম গুরু মহারাজের আখড়া আছে, যেখানে বলবে দিয়ে দেব। পর হাত খালি করে কপোত-কপোতী যথা উচ্চবৃক্ষচূড়ে বাঁধি নীড় থাকে সুখে, সেই রকম ফুর্তিতে থাকা যাবে।
—কিন্তু মোটর কার তো চাই?
—চাই বইকি। তাতে চড়েই তো মুষ্টিভিক্ষা করতে বেরুব, খুদ-কুঁড়ো যা আনব তাই দিয়ে তোমার দিদি পোলাও রাঁধবেন। আর দেখ, আমাদের কুটীরের সঙ্গে লাগাও একটা মস্ত তিন-তলা ধর্মশালা থাকবে, তুমি আর মানিক কেল্টে ভুল্টু হাবলু প্রভৃতি তোমার বন্ধুবর্গ মাঝে মাঝে এসে সেখানে বাস করবে। তার সামনেই একটি চমৎকার খেলার মাঠ—
—উঃ কি মজা! আর দেরি করবেন না, চটপট ভাব করে ফেলুন।