পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
ধুস্তুরী মায়া

আমার দু-গোটা ভাল ভাল বহ‍ু দেশে আছে, বিক্রম সিংএর ভি ওমদা ওমদা জোর আছে। আর বিদ্যাপতিবাবুর বহ‍ু তো মজুত রয়েছে, উনি ইচ্ছা করলেই তেলেনা সরকারকে বিয়া করতে পারেন।

 নায়কদের এই বিদ্রোহ দেখে রামধন আর চুপ করে থাকতে পারলেন না। শ‍ুয়ে থেকেই হাত নেড়ে বললেন, না না, ওসব চলবে না।

 শ্যামসুন্দর বললে, তু কোন্ রে শড়া? তুই কে?

 রামধন উত্তর দিলেন, আমিই গল্পলেখক, তোমাদের স্রষ্টা আর ভাগ্যবিধাতা। তোমরা নিজের মতলবে চলতে পার না, আমি যেমন চালাব তেমনি চলবে। আমার মাথা থেকেই তোমরা বেরিয়েছ।

 বিক্রম সিং বললে, এই ছুছুন্দরটা বলে কি? এই আমাদের পয়দা করেছে? আমাদের বাপ দাদা পরদাদা নেই?

 রম্ভা বললে, কেউ নেই, কেউ নেই, আমরা সব ঝুটো।

 বিক্রম সিং একটানে খাটের ছতরি খুলে ফেলে একটা কাঠ হাতে নিয়ে রামধনকে বললে, এই, আমরা সব ঝুটো?

 রামধন ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলেন, তা এরকম ঝুটা বই কি—যখন আমারই কল্পনাপ্রসূত আপনারা।

 —তুই সচ্চা না ঝুটা?

 —আজ্ঞে আমি তো ঝুটা হতে পারি না।

 —এই ডাণ্ডা সচ্চা না ঝুটা?

 —আজ্ঞে এও ঝুটা নয়।

 অনন্তর তিন নায়ক আর এক নায়িকা ছতরির কাঠ দিয়ে বেচারা রামধনকে পিটতে লাগল। স্বামীর আর্তনাদ শ‍ুনে রামধন-পত্নী ননীবালার ঘুম ভেঙে গেল, তিনি একটি চিৎকার ছেড়ে মূর্ছিত হলেন। তার পর চার মূর্তি তাণ্ডব নাচতে নাচতে অদৃশ্য হল।