পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভরতের ঝুমঝুমি
৪৯

 হিমাচল সমস্ত দেশ জয় করে রাজচক্রবর্তী হবে। এর প্রজারা যে ভূখণ্ডে থাকবে তার নাম হবে ভারতবর্ষ, —বর্ষং তদ্ ভারতং নাম ভারতী যন্ত্র সন্ততিঃ। তুমিও অচিরে পতির সহিত মিলিত হবে। তার পর ট্যাঁক থেকে ঝুমঝুমি বার করতে গিয়েই চক্ষুস্থির।

 আমি বললুম, বলেন কি, ঝুমঝুমি পেলেন না?

 —মোটেই না। আমার পরনের কাপড় উত্তরীয় কম্বল সব ঝাড়লুম, ঝুলি ঘটি মায় জটা সব তন্ন তন্ন করে খুঁজলুম, কোথাও ঝুমঝুমি নেই। শকুন্তলার মুখটি কাঁদোকাঁদো হল, আহা, তার মায়ের দেওয়া উপহারটি হারিয়ে গেল! মেনকা যতই নচ্ছার হক, নিজের মা তো বটে। আমি বললুম, দুঃখ করো না শকুন্তলা, আরও ভাল ঝুমঝুমি এনে দেব।

 দুজন বুড়ী তপস্বিনী শকুন্তলার কাছে ছিল। একজন বললে, পাগলের মতন যা তা ব’লো না ঠাকুর। ছেলের দিদিমার দেওয়া যৌতুক আর তোমার ছাইপাঁশ কি সমান? তুমি ভারী অলবডো মুনি। নিশ্চয় নাইবার সময় তোমার ট্যাঁক থেকে জলে পড়ে গেছে আর মাছে কপ করে গিলেছে। যাও, এখন রাজ্যের র‍ুই-কাতলা ধরে ধরে পেট চিরে দেখ গে।

 অন্য বুড়ীটা বললে, কি বলছ গা দিদি! শ‍ুধু র‍ুইকাতলা কেন, মিরগেল চিতল বোয়াল কালবোস শোল শাল চাঁই ঢাঁই এসব মাছের পেটেও তো থাকতে পারে।

 পুলিন বললে, কচ্ছপের পেটেও যেতে পারে।

 আমি বললুম, হাঙর কুমির শ‍ুশ‍ুক সিন্ধুঘোটক বা জলহস্তীর পেটে যেতেও বাধা নেই।

 দুর্বাসা আমাদের দিকে একবার কটমট করে চাইলেন, তার পর বলে যেতে লাগলেন—