পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভরতের ঝুমঝুমি
৫১

নেবার জন্য কাড়াকাড়ি করবে। ঝুমঝুমির কথা একেবারে ভুলে যান।

 — হায় হায়, ভোলবার জো কি! ওই ঝুমঝুমিই হচ্ছে মেনকার অভিশাপ, শকুন্তলার প্রতিশোধ। আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে, যখন তখন ঝুমঝুম শব্দ শ‍ুনি।

 দুর্বাসা হঠাৎ চিৎকার করে হাত পা ছড়ে নাচতে লাগলেন। সঙ্গে সঙ্গে পুলিনের ছেলে পল্টু তাঁর পায়ের কাছে হ‍ুমড়ি খেয়ে পড়ে চেঁচিয়ে উঠল——মেরে ফেললে রে, সব কটাকে মেরে ফেললে!

 ব্যাপার গুরুতর। পল্টু নিবিষ্ট হয়ে ঝুমঝুমির ইতিহাস শুনছিল সেই অবকাশে ইঁদুরগ‍ুলো তার পকেট থেকে বেরিয়ে দুর্বাসাকে আক্রমণ করেছে। দুটো তাঁর কাঁধে উঠেছে, একটা অধোবাসে ঢুকে গেছে, আর একটা কোথায় আছে দেখা যাচ্ছে না। তাঁর নাচের ঝাঁকুনিতে তিনটে ইঁদুর নীচে পড়ে গেল। পল্টু কোনও রকমে সেগুলোকে দুর্বাসার পদাঘাত থেকে রক্ষা করলে।

 দুর্বাসা বললেন, তুই অতি দুর্বিনীত বালক।

 পুলিন বললে, টেক কেয়ার তপোধন, আমার ছেলেকে যদি শাপ দেন তো ভাল হবে না বলছি।

 দুর্বাসা বললেন, ইঁদুর পোষা মহাপাপ, চণ্ডালেও পোষে না।

 পল্টু রেগে গিয়ে বললে, বা রে, আপনি যে নিজের গায়ে ছারপোকা পোষেন তা বুঝি খুব ভাল? দেখ না বাবা, ঋষি মশায়ের গা থেকে কত ছারপোকা আমাদের বিছানায় এসেছে। আর একটা ইঁদুর কোথা গেল? খাঁজে পাচ্ছি না যে—

 দুর্বাসা আবার চিৎকার করে নাচতে লাগলেন। পল্টু বললে, ওই ওই, দাড়ির ভেতর একটা সেঁধিয়েছে!

 অনুমতি না নিয়েই পল্টু দুর্বাসার দাড়িতে হস্তক্ষেপ করে তার