পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রেবতীর পতিলাভ
৫৯

বুঝিয়ে দিচ্ছি। জান তো, আমার এক অহোরাত্র হচ্ছে মানুষের ৮৬৪ কোটি বৎসর। আচ্ছা, তুমি এই সভায় কতক্ষণ এসেছ?

 রৈবত একটু ভেবে বললেন, বেশীক্ষণ নয়, সওয়া দণ্ড হবে।

 ব্রহ্মা বললেন, গণনা করে বল তো, আমার এই ব্রহ্মসভার সওয়া দণ্ডে নরলোকের কত বৎসর হয়?

 মাথা চুলকে রৈবত বললেন, ভগবান, আমি গণিতশাস্ত্রে চিরকালই কাঁচা। দেবর্ষি নারদ যদি কৃপা করে অঙ্কটি কষে দেন—

 নারদ বললেন, হরে মুরারে! অঙ্ক টঙ্ক আমার আসে না, ও হল নীচ গ্রহবিপ্রের কাজ। রেবতী, তুমি তো শুনেছি খুব বিদুষী, নানা বিদ্যা জান, বল না কত হয়।

 রেবতী বললেন, পিতামহ ব্রহ্মার এক অহোরাত্রে অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় যদি মানুষের ৮৬৪ কোটি বৎসর হয়, তবে সওয়া দণ্ডে অর্থাৎ আধ ঘণ্টায় কত বৎসর হবে—এই তো? তা হল গিয়ে ১৮ কোটি বৎসর। ভগবান, ভুল হয় নি তো?

 ব্রহ্মা বললেন, না না, ঠিক হয়েছে। মহারাজ, বুঝতে পারলে? তুমি যতক্ষণ এখানে সংগীত শুনছিলে ততক্ষণে নরলোকে আঠারো কোটি বৎসর কেটে গেছে। তোমরা সত্যযুগের গোড়ায় এসেছিলে, তার পর বহু চতুর্যগ অতিক্রান্ত হয়েছে। এখন যে চতুর্যুগ চলছে তারও সত্য ত্রেতা গত হয়েছে, দ্বাপরও গতপ্রায়, কলিযুগ আসন্ন।

 শোকে অবসন্ন হয়ে রৈবত বললেন, ভগবান, আমার গতি কি হবে?

 ব্রহ্মা উত্তর দিলেন, কি আবার হবে, তোমার ভাববার কিছু নেই। এখন ফিরে গিয়ে কন্যার বিবাহ দাও, তাহলেই তুমি সকল বন্ধন থেকে মুক্ত হবে। অমরাবতী তুল্য তোমার যে রাজধানী ছিল—কুশস্থলী, তার নাম এখন দ্বারকাপুরী হয়েছে, তা যাদবগণের