পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
ধুস্তুরী মায়া

প্রামাণিক গণ্য হয়। সেই কলিযুগীয় মাপে তুমি একুশ হাত আর রেবতী উনিশ হাত লম্বা।

 —তা হলেই বা ক্ষতি কি?

 —সত্যযুগে মানুষ যেমন একুশ হাত লম্বা, তেমনি ত্রেতায় চোদ্দ হাত, দ্বাপরে সাত হাত, কলিতে সাড়ে তিন হাত। এখন নরলোকে দ্বাপরের অন্তিম দশা, কলিযুগ আসন্ন, সেজন্য মানুষ খাটো হতে হতে চার হাতে দাঁড়িয়েছে, বড় জোর সওয়া চার হাত। এখনকার বেঁটে লোকরা যদি সহসা তোমাদের দেখে তবে রাক্ষস মনে করে ইট পাথর ছড়বে। বিবাহের পূর্বে এরকম গোলযোগ হওয়া কি ভাল?

 —আমাদের কি কর্তব্য আপনিই বলুন।

 নারদ বললেন, নীচে ওই পাহাড়টি চিনতে পারছ?

 রৈবত বললেন, হাঁ হাঁ খুব পারছি, ও তো আমারই প্রমোদগিরি, ওর উপরে নীচে অনেক উপবন আছে, রেবতী ওখানে বেড়াতে ভালবাসে।

 —রাজা, তুমি কীর্তিমান। আঠারো কোটি বৎসর অতীত হয়েছে তথাপি লোকে তোমাকে ভোলে নি, তোমার নাম অনুসারে ওই পর্বতের নাম দিয়েছে রৈবতক। ওখানেই রথ নামানো হক। রেবতীর বিবাহ পর্যন্ত তুমি ওখানে গোপনে বাস কর।

 একটু উত্তেজিত হয়ে রৈবত বললেন, লুকিয়ে থাকব কার ভয়ে? এ তো আমারই রাজ্য। আর, আপনিই তো বলছেন এখনকার মানুষ অত্যন্ত ক্ষুদ্রকায়। আমি একাই সকলকে যমালয়ে পাঠিয়ে নিজ রাজ্য অধিকার করব।

 নারদ বললেন, মহারাজ রৈবত-ককুদ্মী, তুমি সার্থকনামা, একগুঁয়ে ষাঁড়ের মতন কথা বলছ, তোমার বুদ্ধিভ্রংশ হয়েছে। সকলকে