পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লক্ষ্মীর বাহন
৮৩

আর এক শত্রুকে শায়েস্তা করতে হবে। তিনি সেই দিনই সন্ধ্যার সময় মুচুকুন্দবাবুর সঙ্গে দেখা করলেন। মুচুকুন্দর মন ভাল নেই, তাঁর গৃহিণীও পেঁচার শোকে আহার নিদ্রা ত্যাগ করেছেন।

 কৃপারাম বললেন, নমস্তে মুচুবাবু। আমার চিড়িয়া আপনি দিলেন না, জবরদস্তি ধরে রাখলেন, এখন দেখছেন তো, সে দুসরা জায়গায় গেছে।

 মুচুকুন্দ ব্যগ্র হয়ে বললেন, আপনি জানেন নাকি কোথায় আছে?

 —হাঁ, জানি। আপনার ভাই সেই পঞ্চু শালা চোরি করে নিয়ে গেছে, দশ লাখ টাকা না পেলে ছাড়বে না। মুচুবাব, আমার কথা শুনুন, আমার সাথ দোস্তি করুন। ব্যাঙ্ক কটন-মিল ওগয়রহ আপনার থাকুক, আমি তার ভাগ চাই না, কেবল মিলিটারি ঠিকার কাজ আপনি আর আমি এক সাথ করব, মুনাফার বখরা আধাআধি। পঞ্চুর সঙ্গে আমার ফরাগত হয়ে গেছে। লক্ষ্মী পেঁচা পালা করে এক মাস আপনার কাছে এক মাস আমার কাছে থাকবে, তাহলে আর আমাদের মধ্যে ঝগড়া হবে না। বলুন, এতে রাজী আছেন?

 মুচুকুন্দ বললেন, আগে পেঁচা উদ্ধার করুন।

 —সে আপনি ভাববেন না, দু দিনের মধ্যে পেঁচা আপনার বাড়ি হাজির হবে। আমার মতলব শুনুন। ফজলু আর মিসরিলাল গুণ্ডাকে আমি লাগাব। তারা তাদের দলের লোক নিয়ে গিয়ে কাল দুপহর রাতে পঞ্চুর বাড়িতে ডাকাতি করবে, যত পারে লুঠ করবে, পঞ্চুকে ঐসা মার লাগাবে যে আর কখনও সে খাড়া হতে পারবে না।

 —পেঁচার কি হবে?

 —সে আপনি ভাববেন না। আমি কাছেই ছিপিয়ে থাকব, ফজলু আর মিসরিলাল আমার হাতেই পেঁচা দেবে।