পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অক্রূরসংবাদ
৯১

 —আপনি ভাগ্যবান লোক।

 —তা বলতে পারেন। বাবা এত টাকা রেখে গেছেন যে রোজগারের কোনও দরকারই নেই। অন্নচিন্তা থাকলে উচ্চচিন্তা করতে পারতুম না। আমি বেকার অলস লোক নই, দিনরাত গবেষণা করি কিসে মানুষের বুদ্ধি বাড়বে, সমাজের সংস্কার হবে। কিন্তু মুশকিল কি জানেন? আমি অন্তত দু শ বৎসর আগে জন্মেছি, এখনকার লোকে আমার থিওরি বুঝতেই পারে না।

 —আমিই যে বুঝব সে ভরসা করছেন কেন?

 —বুঝবেন, একটু চেষ্টা করলেই বুঝবেন। আপনার দুই কানের ওপরে একটু ঢিপি মতন আছে, ওই হল বোদ্ধার লক্ষণ। আসুন, এই আমার আস্তানা অক্রূরধাম। পৈতৃক বাড়িটি কাকারা পেয়েছেন, এ বাড়ি আমি করেছি।

 অক্রূরধাম বিশেষ বড় নয় কিন্তু গড়ন ভাল। বারান্দায় চার-পাঁচ জন দারোয়ান চাকর ইত্যাদি একটা বেঞ্চে বসে গল্প করছিল, মনিবকে দেখে সসম্ভ্রমে উঠে দাঁড়াল। অক্রূরবাবু হাতের ইশারায় তাদের বসতে বলে আমাকে তাঁর বৈঠকখানা ঘরে নিয়ে গেলেন। ঘরটি মাঝারি, আসবাব অল্প, কিন্তু খুব পরিচ্ছন্ন।

 ঘরে ঢোকবার সময় দরজার পাশের দেওয়ালে আমার হাত ঠেকে গিয়েছিল। দেখলাম একটু আঁচড়ে গেছে। অক্রূরবাবু তা লক্ষ্য করে বললেন, খোঁচা খেয়েছেন বুঝি? ভয় নেই, ওষুধ দিচ্ছি। এই বলে তিনি আমার হাতে বেগনী কালির মতন কি একটা লাগিয়ে দিলেন।

 আমি বললুম, আপনি ব্যস্ত হচ্ছেন কেন, ও কিছুই নয়, একটু ছড়ে গেছে। বোধ হয় ওখানে একটা পেরেক আছে।

 —একটা নয় মশাই, সারি সারি পিন বসানো আছে, হাত দিলেই