পাতা:নদীয়া-কাহিনী - কুমুদনাথ মল্লিক.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নদীয়া কাহিনী । S as হইলেন। রামরুদ্রবিদ্যানিধি মহারাজকে বলিলেন “মহারাজ আপনি নিশ্চিন্তমনে স্নানাদি করুন। আমার একটি নিবেদন, অদ্য দিবারাত্রির মধ্যে আর আমাকে । খোজ করিবেন না, আগামী কল্য প্রত্যুষে আসিয়া আমি মহারাজের সহিত সাক্ষাৎ - করিব।” মহারাজ বলিলেন “বুঝিয়াছি তুমি পলাইবে, কিন্তু পলায়ন বৃথা, বাদুসাের মুলুক ছাড়িয়া কোথায় যাইবে ? যেখানে যাইবে, সেখানেই ধরা পড়িবে।” বিদ্যানিধি বলিলেন “মহারাজ ! প্ৰাণের মায়া কি এতই অধিক যে, মহারাজকে ছাড়িয়া নিজের ধিক্‌কৃত ক্ষুদ্ৰ প্ৰাণ লইয়া পলায়ন করিব ?” মহারাজ বিদ্যানিধির তেজস্বিতাপূর্ণ স্বভাব অবগত ছিলেন, আর কিছু বলিলেন না। কিন্ত । নানা সন্দেহ ও কল্পনায় তাহার হৃদয় ব্যাকুল হইয়া রহিল। এদিকে বিদ্যানিধি মহারাজের কৰ্ম্মচারীদের দ্বারা একশত আটটি লোহিতবর্ণ জবাকুসুম সংগ্ৰহ করিলেন এবং একটি তামার ক্ষুদ্র কলস, একখানি তাম্রথালা ও অন্যান্য পুজোপকরণ লইয়া গঙ্গাগর্ভে অবতরণ করিলেন। তাহার পর, জলের ধার দিয়া বরাবর উত্তরাভিমুখে প্রস্থান করিতে লাগিলেন। যতদূর দেখা গেল, মহারাজের লোকেরা তাকাইয়া রহিল; তাহার পর, ফিরিয়া গিয়া মহারাজকে সংবাদ দিল। মহারাজ কোন কথাই বলিলেন না। বিদ্যানিধি সহর অতিক্রম করিয়া বহুদূরে গঙ্গাগৰ্ভস্থ এক | নির্জন স্থানে পুজার দ্রব্য রাখিয়া স্নান করিলেন। তাহার পর সন্ধ্যা শেষ করিয়া একশত আটটি জবাকুসুম দ্বারা যথাবিধি স্বীয় কৌলিক উপান্তদেব ভগবানু। সহস্ৰাংশুর অৰ্চনা করিলেন। সন্ধ্যার প্রাকৃকালেই তাম্র-কলাসটি যথাস্থানে স্থাপিত করিয়া মন্ত্রবলে রাহুকে আকর্ষণ পূর্বক ঐ কলসের মধ্যে প্ৰবেশ, করা ইলেন। তাহার পর, উহার উপরিভাগে তাম্রথালাখানি রাখিয়া পাঁচটি শিবলির তদুপরি স্থাপনপূর্বক পূজা শেষ করিয়া একাগ্ৰামনে আপ আরম্ভ করিলেন। রজনী । সমাগত হইল, জ্যোৎস্নায়ু চতুর্শিদকু পুলকিত। প্রাসাদেৱ উপরিভাগে ছাথে নবাব ও তঁহার পরিষদগণের জন্ত আসন স্থাপিত হইল। সপরিষদ নবাব উৎসুকচিত্তে আকাশের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া রহিলেন। নক্ষত্রমাল-পরিশোভিত। পূৰ্ণশশধর নবাবের উৎকণ্ঠা দেখিয়া দূর হইতে যেন হাস্যা করিতে লাগিলেন। , প্রহরে গ্রহরে ঘড়ী বাজিতে লাগিল। যখন রাত্রি একটা বাজিল তখনও আকাশ নিৰ্ম্মল, সামান্ত একখণ্ড মেষ পৰ্য্যন্ত আকাশে নাই, পুৰ্ণশশধরের অনন্তু জ্যোৎস্না স্বাশিতে জগৎ উদ্ভিাসিত। নবাবের চক্ষু নিদ্রার আকর্ষণে দুলু ঢুলু করিতেছে, আর