পাতা:নবীন - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবীন

প্রজাপতি রঙ ভাসালো নীলাম্বরে
মৌমাছিরা ধ্বনি উড়ায় বাতাস ’পরে
  দখিন হাওয়া হেঁকে বেড়ায় জাগো জাগো,
  দোয়েল কোয়েল গানের বিরাম জানে না গে,
  ক্ত রক্তের জাগ্লো প্রলাপ অশোক গাছে॥

অশোকবনের রংমহলে আজ লাল রঙের তানে তানে পঞ্চম-রাগে সানাই বাজিয়ে দিলে, কুঞ্জবনের বীথিকায় আজ সৌরভের অবারিত দানসত্র। আমরাও তো শূন্যহাতে আসিনি। দানের জোয়ার যখন লাগে অতল জলে তখন ঘাটে ঘাটে দানের বোঝাই-তরী রসি খুলে দিয়ে ভেসে পড়ে। আমাদের ভরা নৌকো দখিন হাওয়ায় পাল তুলে সাগর-মুখো হোলো, সেই কথাটা কণ্ঠ খুলে জানিয়ে দাও।

ফাগুন তোমার হাওয়ায় হাওয়ায়
ক’রেছি যে দান
আমার আপনহারা প্রাণ,
আমার বাঁধন-ছেঁড়া প্রাণ॥
তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রং লাগলো আমার অকারণের সুখে,
তোমার ঝাউএর দোলে
মর্ম্মরিয়া ওঠে আমার দুঃখরাতের গান॥
পূর্ণিমা সন্ধ্যায়
তোমার রজনী-গন্ধায়
রূপ সাগরের পারের পানে উদাসী মন ধায়।