পাতা:নব্য জাপান ও রুষ জাপান যুদ্ধের ইতিহাস - উমাকান্ত হাজারী.pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নব্য জাপান
২৭

 ইহার কতিপয় বর্ষ পরে, ইংরাজ, ফরাসী প্রভৃতি ইয়ুরােপীয় জাতিগণ আমেরিকাবাসীর ন্যায় জাপানের সহিত বাণিজ্য-সন্ধি সংস্থাপন করেন। কিন্তু খৃষ্টশিষ্যগণের অদম্য জঠরানল সহজে পরিতৃপ্ত না হওয়ায়, ১৮৬৩ খৃঃ ১১ই আগষ্ট তারিখে কোগিশামা নামক স্থানে তাহাদের সহিত জাপানিগণের একটী ক্ষুদ্র যুদ্ধ সংঘটিত হয়। বলা বাহুল্য এই যুদ্ধেও জাপানীরা সম্পূর্ণ পরাস্থ হয়।

 উপরিউক্ত ঘটনানিচয় হইতেই নিপনের নবযুগ আরম্ভ হইল। বৈদেশিক জাতির হস্তে বার বার পরাজিত হইয়া জাপানবাসীর হৃদয়ে যে গভীর ক্ষত উৎপন্ন হইল, অদ্যাপিও তাহার রক্ত নির্গম রুদ্ধ হয় নাই। পেরির উৎপীড়নে অনেকেই ব্যথিত হইয়াছিলেন। এক্ষণে ইয়ুরােপীয় খৃষ্টান জাতির আচরণ দেখিয়া সকলেরই মােহনিদ্রা ভঙ্গ হইল। জাপানের সুসন্তান মাত্রেই বুঝিলেন, আর রক্ষা নাই; এখন হইতে সাবধান না হইলে, অনতিকাল মধ্যেই সমগ্র রাজ্য শত্রুর করাল-কবলে নিপতিত হইবে; নিপনের আজন্ম-স্বাধীনতা-সূর্য্য চিরদিনের জন্য অস্তমিত হইবে।

 বাগ্মিগণ হৃদয়বিলােড়নকারিণী বহ্নিতাপােচ্ছাসিনী বক্তৃতা দ্বারা, সুলেখকগণ অন্তর প্রজ্জ্বালনকারিণী রণােন্মাদিনী রচনা দ্বারা, স্বদেশীয় শ্রোতৃবর্গের ও পাঠকবৃন্দের চিত্ত উন্মত্ত করিয়া তুলিলেন। পরিশেষে,অতি অল্প দিবস মধ্যেসমগ্র জাপানবাসী একবাক্যে স্থির করিলেন যে, স্বদেশহিত-যজ্ঞে স্বার্থপশু উৎসর্গ না করিলে কোন উপায়েই জননী জন্মভূমির স্বাধীনতা রক্ষা হইবে না।

 (  )