অমতে কলিকাতায় গিয়াছিলেন। তিনি নিজে বড় আশা করিয়া গিয়াছিলেন;— সব ব্যর্থ হইয়াছে! যে বিশ্বাসে তিনি দুঃখেও সুখ পাইতেন— সে বিশ্বাস চূর্ণ হইয়া গিয়াছে।
নবীনচন্দ্র গৃহে উপনীত হইলেন। ভ্রাতার মুখ দেখিয়া শিবচন্দ্র শঙ্কিত হইলেন; জিজ্ঞাসা করিলেন, “নবীন, সব ভাল ত?”
নবীনচন্দ্র মাথা নাড়িয়া জানাইলেন—ভাল।
শিবচন্দ্র বুঝিলেন, তাঁহার আশঙ্কাই সত্য হইয়াছে — নবীনচন্দ্র বিফলযত্ন হইয়া ফিরিয়া আসিয়াছেন। তিনি ভ্রাতাকে আর সে কথা জিজ্ঞাসা করিলেন না। সে কথা উভয়েরই পক্ষে কষ্টকর।
নবীনচন্দ্র অন্তঃপুরে প্রবেশ করিলেন না। অল্পক্ষণ বিশ্রামের পর তিনি স্নানার্থ গমন করিলেন। স্নানের পর উভয় ভ্রাতা একত্র আহারের জন্য অন্তঃপুরে গমন করিলেন।
পিসীমা ও বড় বধূ ব্যস্ত হইয়া ছিলেন। পিসীমা জিজ্ঞাসা করিলেন, “নবীন, প্রভাত, বৌমা, খোকা—সব ভাল আছে ত?”
নবীনচন্দ্র মুখ তুলিতে পারিলেন না। নতদৃষ্টি রহিয়াই বলিলেন,
-“হাঁ।”
“বৌমা কবে আসিবে?”
নবীনচন্দ্র ধীরে ধীরে বলিলেন, “এখন কেহ আসিবে না।—” যেন সব অপরাধ তাঁহার।
শিবচন্দ্রের হৃদয়ে যেন ছুরিকা বিদ্ধ হইল।
প্রিয়তম ভ্রাতার অপমান শিবচন্দ্রের হৃদয়ে শেলসম বাজিল। দত্তগৃহে বিষাদের গাঢ়তর ছায়া পড়িল।
১৫৭