বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

সকল আয়োজন স্থির ছিল; কেবল কালের দৌর্ব্বল্য ও বর্ষা— এই উভয় কারণে যাওয়া ঘটে নাই। সুতরাং পত্র পাইয়া আর যাইতে বিলম্ব হইল না!

 যাইবার কয় দিন পূর্ব্ব হইতে কমল আবার বড় অসুস্থ বোধ করিতে লাগিল। চক্ষু জ্বালা করে, মাথা ধরে, আহারে রুচি নাই, মুখ বিস্বাদ,— শরীরে সুখ নাই। কমলের ঘুসঘুসে জ্বর হইতেছিল। শরীরের শক্তি ক্রমে ক্ষয় হইয়া আসিতেছিল; অথচ সে ক্ষয় ধীরে ধীরে হইতেছিল,—সহজে অনুভূত হয় না। নিয়তির কঠোর কার্য্য প্রকৃতি যেন স্নেহবশে যথাসম্ভব যাতনাবিহীন করিতেছিল।

 প্রথমে স্থির হইয়াছিল, শিবচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, সতীশচন্দ্রের জননী ও সতীশচন্দ্র কমলকে লইয়া কলিকাতায় যাইবেন। শিবচন্দ্র স্বয়ং যাইবার জন্য বাস্ত হইয়াছিলেন। তাঁহার উৎকণ্ঠার অবধি ছিল না। কিন্তু বৈষয়িক কার্য্যের অনুরোধে তাঁহার যাওয়া ঘটিয়া উঠিল না। তিনি বলিলেন, কার্য্য শেষ করিয়াই যাইবেন। চিকিৎসাদি সম্বন্ধে তিনি নবীনচন্দ্রকে অনেক উপদেশ দিলেন; কিন্তু পুত্ত্রের সম্বন্ধে কোনও কথাই বলিলেন না।

 নবীনচন্দ্র, সতীশচন্দ্র ও সতীশচন্দ্রের জননী কমলকে লইয়া কলিকাতায় গমন করিলেন। দত্ত-পরিবারে সকলেই উৎকণ্ঠিত হইলেন। শিবচন্দ্র সংবাদের আশায় পথ চাহিয়া রহিলেন। পিসীমা’র ও বড় বধূর আশঙ্কা যেন অসহনীয় হইয়া উঠিল।

১৭১