বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/২৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চম পরিচ্ছেদ।

প্রত্যাবর্ত্তন।

একদিন আহার্য্য প্রস্তুত হইলে প্রভাতকে ডাকিতে যাইয়া নবীনচন্দ্র দেখিলেন, সে কাঁদিতেছে। শঙ্কিত ও ব্যস্ত হইয়া তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করিলেন। প্রভাতের জ্যেষ্ঠ শ্যালক পত্র লিখিয়াছেন, তাহার দুর্ব্বল কনিষ্ঠপুত্ত্র পীড়িত। জলরাশি সঞ্চিত হইতে হইতে শেষে একদিন সব বাধা অতিক্রম করিয়া প্রবাহিত হয়— সে দিন তাহার গতি রোধ করা দুঃসাধ্য। তাই আজ প্রভাতের অশ্রুধারা আর নিবৃত্ত হয় না। নবীনচন্দ্র বহুক্ষণে তাহাকে শান্ত করিলেন। তিনি সব শুনিলেন; বলিলেন, “চল্, আমরা কলিকাতায় যাই। তাহাদের লইয়া আসিব।”

 প্রভাত মুহূর্ত্ত চিন্তা করিয়া বলিল, “বাবা সম্মতি দিবেন কি?”

 নবীনচন্দ্র ভ্রাতুষ্পুত্ত্রের অশ্রুসিক্ত নয়ন মুছাইয়া বলিলেন, “বাবা, তিনি অভিমান করিতে পারেন— করুন। আমি পারিব না। যে দিন ভগবান আমাকে ভিখারীর অধম করিয়া সংসারে সবহারা করিয়াছিলেন, সে দিন তোদের দুই জনের দিকে চাহিয়া আমি অশান্ত হৃদয় শান্ত করিয়াছিলাম। আজ তুই ছাড়া আমার আর কেহ নাই।” বলিতে বলিতে নবীনচন্দ্রের দুই চক্ষু দিয়া অশ্রুধারা ঝরিতে লাগিল।

 প্রভাত পূর্ব্বে কখনও পিতৃব্যকে এমন ভাবে কাঁদিতে দেখে নাই। তাহার অশ্রুধারা দ্বিগুণ বহিতে লাগিল। সঙ্গে সঙ্গে সে

২৮৫