পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

রক্তরাগ; কোথাও ধূসরের সহিত ঈষৎ রক্তাভার মিশ্রণ, কোথাও স্বর্ণাভ লোহিত; কোথাও পল্লবরাগতাম্র, কোথাও গাঢ় পাটল; কোথাও নীলে লালে মেশামিশি, কোথাও নিরবচ্ছিন্ন নীল; কোথাও নীলে শ্বেতের আভাষ, কোথাও নীলের কোলে শ্বেত।

 প্রভাত পিতৃব্যের সহিত গৃহে ফিরিতেছিল। যেন তাহারও অজ্ঞাতে তাহার পল্লী-প্রকৃতি নগরের বিকৃতির কৃত্রিম আবরণ ত্যাগ করিতেছিল।

 অধিকাংশ ক্ষেত্রের আশু ধান্য কর্ত্তিত ও পরিষ্কৃত হইয়া গোলায় উঠিয়াছে। যে সকল ক্ষেত্রে শস্য বিলম্বে পক্ক হইয়াছে, সে সকল ক্ষেত্রের ধান্য আনিয়া খামারে ফেলা হইয়াছে। পথিপার্শ্বে ই স্থানে স্থানে ভূমিখণ্ড পরিষ্কৃত ও গোময়লিপ্ত করিয়া খামার করা হইয়াছে। সেই খামারে কর্ত্তিতমূল ধান্য বিছান হইয়াছে; তাহার উপর কতকগুলি গরু ঘুরিতেছে। তাহাদের পায়ের চাপে শস্য বিচ্ছিন্ন হইয়া পড়িতেছে। পশুগুলি সুযোগ পাইলেই এক এক গ্রাস শীর্ষ মুখে লইয়া আহার করিতেছে। আজ সে বিষয়ে তাহারা নির্ভয়; কারণ, ধান্য মাড়াইয়ের সময় গরু শস্যশীর্ষ আহার করিলে চাষীর তাহাকে তাড়না করিতে নাই।

 শরতের সান্ধ্য সমীরণ শীতের আভাষ দিতেছে। তাহার স্পর্শে বৃক্ষপত্র কম্পিত হইতেছে। অল্পকালমধ্যেই সকলে গ্রামে প্রবেশ করিলেন। তখন গৃহে গৃহে সন্ধ্যাদীপ জ্বালা

২৬