পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
শিবচন্দ্র কি ভাবিলেন?
হেমন্তের প্রভাতে রৌদ্র কেবল উপভোগযোগ্য মধুর হইয়া আসিতেছে। শিবচন্দ্র প্রাতঃস্নান শেষ করিয়া আসিয়াছেন; চণ্ডীমণ্ডপে বসিয়া ধূমপান করিতেছেন। গ্রামের ডাক-হরকরা গৃহে প্রবেশ করিল। তাহার গাত্রে একখানি অর্দ্ধছিন্ন মলিন বালাপোশ, পদে প্রায় হাঁটু পর্যন্ত ধূলি। সে আসিয়া শিবচন্দ্রকে নমস্কার করিল। শিবচন্দ্র তাঁহার পুত্ত্র—কন্যাদিগের কুশল জিজ্ঞাসা করিলেন। সে উত্তর দিল; তাহার পর ব্যাগের মধ্য হইতে একখানি পত্র বাহির করিয়া শিবচন্দ্রের হস্তে দিয়া প্রস্থান করিল।
খামের হস্তাক্ষর সুপরিচিত নহে। শিবচন্দ্র খামখানা দুই চারিবার নাড়া চাড়া করিলেন, পরে খুলিয়া পড়িতে লাগিলেন। পড়িতে পড়িতে তাঁহার মুখে বিরক্তিভাব সুস্পষ্ট হইয়া উঠিল।
পত্রখানি পাঠ করিয়া শিবচন্দ্র ডাকিলেন, “লক্ষণ!” উত্তর না পাইয়া তিনি পুনরায় ডাকিলেন।
“আজ্ঞা যাই।”—বলিয়া পরক্ষণেই ভৃত্য আসিয়া উপস্থিত হইল।
শিবচন্দ্র বলিলেন, “নবীনকে ডাকিয়া আন্।”
যে পাকশালায় আমরা পিসীমাকে অন্নপূর্ণারূপে বিরাজিতা দেখিয়াছি, সেই পাকশালার পশ্চাতে উচ্চপ্রাচীরবেষ্টিত প্রাঙ্গন।
৪৬