পাতা:নানাচর্চা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२७० नांना फ़क़ দ্বিতীয় কারণ এই যে, বৰ্ত্তমানে মানুষ বস্তুজগতের ততটা অধীন নয়, বস্তুজগত মানুষের যতটা অধীন। জাতিতে জাতিতে মনের ও ব্যবহারের পার্থক্য কমে আসছে বলে”। এ ভয় পাবার দরকার নেই যে, মানবজীবন বৈচিত্র্যহীন হ’য়ে পড়বে। জাতিতে জাতিতে প্ৰভেদ যেমন কমে আসছে, ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে প্ৰভেদ তেমনি বেড়ে চলেছে-এক কথায় বিশিষ্টতা এখন জাতিকে ত্যাগ করে ব্যক্তিকে আশ্রয় করেছে । আমার বিশ্বাস "ভবিষ্যতের মানব-সভ্যতা এই ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের গুণে অপূৰ্ব্ব বৈচিত্ৰ্য লাভ করবে এবং এই বিচিত্ৰতাই হবে তার বিশিষ্টতা। অন্ততঃ আমাদের সভ্যতার জন্যে সে ভাবনা নেই। ভারতবর্ষ যদি একদেশ হিসেবে ধরা যায়, তাহ’লে সে দেশের সভ্যতা যুগপৎ হার বোলা ও বহুরূপী হ’তে বাধ্য। ভবিষ্যতে যা হবার সম্ভাবনা, তা নাও হতে পারে ; কিন্তু অতীতে যা হয়ে গেছে, তা যে হয়ে গেছে তার আর সন্দেহ নেই। এবং প্রতি প্ৰাচীন সভ্যতার যে একটা বিশেষ রূপ ও বিশেষ ধৰ্ম্ম তাছে, সে কথাও অস্বীকার করা অসম্ভব । অথচ এ সকল সভ্যতার সামাজিক ব্যবহার এবং মনোভাবের মিলও বড় কম নয়। পণ্ডিত ব্যক্তিদের মতে গ্ৰীক রোমান এবং হিন্দু সভ্যতার ভিতর ঠিক ততখানি মিল আছে, গ্ৰীক ল্যাটিন ও ংস্কৃত ভাষার ভিতর যতখানি মিল আছে ; এবং সে মিল প্রথমতঃ কম নয়, দ্বিতীয়তঃ তা ধাতুগত। যদিচ আমি পণ্ডিত নই, তবুও এ মত গ্রাহ্য করতে আমি কিছুমাত্র কুষ্ঠিত নই। তার কারণ, আমার বিশ্বাস সকল সভ্যতারই ধাতু এক, প্রত্যয় শুধু আলাদা। সে যাই হোক, যে-ক’টি প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে আমার পরিচয় আছে, সে সবগুলিই আমার মনে হয় একজাতীয়, অর্থাৎ আমার কাছে তার প্রতিটি হচ্ছে এক একখানি কাব্য।