পাতা:নাবিক-বধূ.djvu/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ
১২১

 পাচক হো হো করিয়া হাসিয়া উঠিল। তাহার হাসি দেখিয়া ডড্‌লে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ব্যাপার কি ব্লেক? এমন কি মজা হইয়াছে যে, তুমি না হাসিয়া থাকিতে পারিলে না?”

 পাচক আরও খানিকটা হাসিয়া বলিল, “বেটারা আচ্ছা জব্দ হইবে। জাহাজখানা যতদিন পর্যন্ত এডেন বন্দরে না পৌঁছিবে—ততদিন ক্ষুধার জ্বালায় সকলকে ছট্‌ফট্ করিতে হইবে। সাধে কি হাসিয়াছি? মজাটা টের পাবেন বাছাধনেরা। জাহাজে আর বাবুর্চ্চি নাই, আমার একটা জোগারদার আছে বটে, কিন্তু সে রাঁধিতে জানে না। কাপ্তেন দায়ে পড়িয়া তাহাকেই রাঁধিতে বাধ্য করিবে। সে যাহা রাঁধিবে, তাহা কি কেহ খাইতে পারিবে? উপোষ মশায়, বিলকুল লোককে উপোষ করিয়া থাকিতে হইবে। শুকনো রুটি, বিস্‌কিট্ চিবাইয়া আর কয়দিন কাটাইতে পারা যায়?—হা হা, হো হো, হি হি।”

 পাচকের হাসি আর থামে না।—ডড লে গম্ভীর হইয়া বলিলেন, “তোমার ভারি যে হাসির ঘটা।—জাহাজে ত খাইবার জিনিসের অভাব নাই, একরকম করিয়া চালাইয়া লইবে।”

 পাচক বলিল, “হাঁ, চালাইয়া লইবে বই কি? কিন্তু কি ভাবে চালাইবে তা ভাবিয়াই ত আমার হাসির ফোয়ারা খুলিয়া গিয়াছে। আমি আমার সেই জোগাড়দারটাকে কতদিন বলিয়াছি, বাপু, একটু রাঁধিতে শেখ।—কিন্তু সে কথা তাহার গ্রাহ্যই হইত না, সে ক্রমাগত ফাঁকি দিত। এবার তাহার ফল পাইবে। এক জাহাজ লোক—খাই-খাই করিয়া তাহাকে জ্বালাতন করিয়া তুলিবে।”

 ডড্‌লে এ সম্বন্ধে আর কোন কথা না বলিয়া মিস্ এরস্‌কাইনকে বলিলেন, “আপনার বোধ করি ঘুম পাইতেছে। বোটের খোলের মধ্যে আপনার শয়নের ব্যবস্থা করিয়া দিব? ব্লেক, দেখ ত উঁহার শয়নের কি ব্যবস্থা করা যায়।”

 মিস্ এরস্‌কাইন বলিলেন, “না থাক, আমার ঘুম আসে নাই। আমার জন্য আপনাকে ব্যস্ত হইতে হইবে না।