বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

হইয়া গেলে সমাজে পরিবারের কলঙ্ক রটিবে, সে ভয় তাহাদের নাই। নিজে কোন কীর্ত্তির কর্ম্ম করিয়া গেলে পরিবারের দশজন এবং ভবিষ্যৎ বংশধরেরা তাহা লইয়া গৌরব করিবে—কোন নিগ্রোই এইরূপ ভাবিতে শিখে না।

 আমার কথা বলিলেই সকলে বিষয়টা বুঝিতে পারিবেন। আমার মাতামহী কে ছিলেন কখনও জানি না। আমি শুনিয়াছি আমার মামা মামী, পিসা পিসী, কাকা কাকী এবং মাস্‌তুত পিসতুত খুড়তুত ভাইবোন ইত্যাদি আছেন। কিন্তু তাঁহারা কে কোথায় কি করিতেছেন কিছুই জানি না। আমাদের নিগ্রোজাতির সকলেরই পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থা এইরূপ। কিন্তু শ্বেতকায়দিগের কথা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। প্রতিপদবিক্ষেপেই তাহাদিগকে পশ্চাতে ফিরিয়া তাকাইতে হয়। তাহারা যদি একটা অন্যায় কার্য্য করিয়া ফেলে, তাহা হইলে তাহার চৌদ্দপুরুষের মুখে চুণ-কালি পড়িবে। এই জ্ঞান তাহাদের সর্ব্বদা থাকে। কাজেই প্রলোভন, অসংযম ইত্যাদি তাহারা সহজে কাটাইয়া উঠিতে পারে। যখনই কোন শ্বেতকায় ব্যক্তি কর্ম্ম আরম্ভ করে, তখনই তাহার মনে বিরাজ করিতে থাকে যে, তাহার পূর্ব্বপুরুষেরা নানা সৎকর্ম্ম করিয়া প্রসিদ্ধ হইয়াছেন, সুতরাং সেও যে সিদ্ধিলাভ করিবে তাহা ত সুনিশ্চিত। পূর্ব্বপুরুষদের কৃতকার্য্যতা বর্ত্তমান প্রয়াসের একটা মস্ত সহায়।

 আমার অভিভাবক বেশী দিন আমাকে পাঠশালায় যাইতে দিলেন না। কিছুকাল পরেই আমার নাম কাটা হইয়া গেল।