বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর - বিনয়কুমার সরকার (১৯১৪).pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
নিগ্রোজাতির কর্ম্মবীর

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কাহাকে বলে তাহা জানা যায় না। সমস্ত দিন খাটিতে খাটিতে শরীরে এত ময়লা আসিয়া জমে যে তাহা আর উঠে না। এইজন্য আমি এই কাজে বিশেষ নারাজ ছিলাম। তাহার উপর, খনির মুখ হইতে কয়লার স্তর পর্য্যন্ত এক মাইল দূর। সেই রাস্তায় অন্ধকার সুড়ঙ্গের ভিতর দিয়া চলিয়া গেলে তবে কয়লার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। সেই খানে আবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কয়লার কামরা বা পাড়া। সেইগুলিকে অন্ধকারের মধ্যে চিনিয়া বাহির করা বড় সোজা কথা নয়। সেখানকার উত্তর-দক্ষিণ পূর্ব্ব-পশ্চিম আমি কিছুই বুঝিতে পারিতাম না। কয়লার কামরাগুলিও আমি কোন দিনই খুঁজিয়া লইতে পারি নাই। অধিকন্তু হঠাৎ যদি লণ্ঠনের আলো নিবিয়া যাইত, তাহা হইলে “ছিদ্রেষ্বনর্থা বহুলীভবন্তি” হইত। এদিক ওদিক অন্ধের ন্যায় ঘুরিয়া বেড়াইতাম—দৈবাৎ অন্য কোন কুলীর দেখা পাইয়া পথ বাছিয়া লইতাম। মৃত্যুভয়ও কম ছিল না। খনির ভিতর দুর্দ্দৈব প্রায়ই ঘটিত। কোন সময়ে একচাপ কয়লা ধসিয়া পড়িয়া অসংখ্য লোকের মৃত্যুর কারণ হইত। কখনও বা বারুদ যথাসময়ের পূর্ব্বে ফাটিত। তাহাতে অসতর্ক কুলীরা মারা যাইত।

 ছেলেবেলায় যখন আমি নুনের কলে অথবা কয়লার খাদে কাজ করিতাম, তখন আমি শ্বেতাঙ্গ বালকদের মনের অবস্থা এবং হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষা কল্পনা করিতে চেষ্টা করিতাম। যৌবনকালেও অনেকবার শ্বেতাঙ্গ যুবকদের অন্তরের চিন্তারাশি অনুমান করিতে চেষ্টা করিয়াছি। ভাবিতাম তাহাদের উচ্চ অভিলাষকে