পাতা:নির্জ্জন গৃহকোণে.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্জন গৃহকোণে । সকাল হয়েছে বটে, রবিরশ্মি কিন্তু এখনও মলিনার ঘরে প্রবেশ করেনি। নদীবক্ষে, বালুকাস্ত পে, পথে প্রাস্তরে সর্বত্র স্বৰ্য্যকিরণ প্রতিফলিত । বাগানের গাছের দীর্ঘ ছায়া এসে পড়েছে জানালার সার্সীতে, মলিনার ধরে তাই আলো নেই। মধ্যাঙ্গে স্বৰ্য্য যখন মধ্য গগনে, তখন সেই ঘরে গণকাল বিছুরিত হয়ে পড়ে অজস্র আলো, মেঝের ধূলিকণাগুলি পৰ্য্যন্ত স্পষ্ট হয়ে ওঠে, প্রাচীরের ওপর থেকে টবের গাছগুলির ছায়া ইতস্ততঃ ভেসে বেড়ায় । কিন্তু কতক্ষণ, ঘূর্ণ্যমান পৃথিবী, স্বৰ্য্য সরে যায়, দেয়ালে মেঘের ছায়া ক্রমশঃ প্রসারিত হয়। লাল, নীল, ধূসর কত বিচিত্র ছায়া । গ্রীষ্মের উত্তপ্ত দিনে আকাশ আর মেঘ যখন পাথরের মত কঠিন, আলোর ঔজ্জ্বল্য রূঢ় রুক্ষ হয়ে ওঠে, এ হোল সে দিনের প্রাকৃতিক ইতিহাস । মেঘাচ্ছন্ন দিনে আকাশ নেমে আসে নীচে —আরও নীচে । প্রভাত, মধ্যায়, অপরাষ্ট্র ও স্বৰ্য্যাস্তের কোনও রূপ নেই, বৈচিত্র্য নেই, গতি নেই, মেঘভারাক্রান্ত আকাশে সবই সমান। অন্ধকার বেড়ে চলে । দেয়ালের ছবি ক্রমশঃ সুস্পষ্ট হয়ে আসে। সার্স সারাদিন বন্ধ— বাইরের জোলো হাওয়া ঘরে না আসে, দীর্ঘ নিরবিচ্ছিন্ন প্রদোষান্ধকার সারাদিনকে গ্রাস করেছে ।