পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

sv নিৰ্বাসিত্তের আত্মকথা ইংরাজের যুদ্ধ। যুদ্ধ বাধিবার অল্পদিনের মধ্যেই কৰ্ত্তাদের মুখ যেন শুকাইয়া গেল। কয়েদীদের তাড়া করিবার প্রবৃত্তি আর বড় বেশী রহিল না। অষ্ট্ৰীয়ার রাজপুত্রের হত্যাকাণ্ড হইতে আরম্ভ করিয়া প্যারী নগরীর ২০ মাইলের মধ্যে জৰ্ম্মান সৈন্যের আগমন সংবাদ সবই আমরা জেলের ভিতরে বসিয়া পাইতেছিলাম । শেষে যখন এমডেন আসিয়া মাদ্রাজের উপর গোলা ফেলিয়া চলিয়া গেল তখন ব্যাপারটা আর সাধারণ কয়েদীর নিকট হইতে লুকাইয়া রাখা সম্ভবপর হইল না। ইংরেজের বাণিজ্য ব্যাপারের যে যথেষ্ট ক্ষতি হইতেছে তাহা কয়েদীদেরও বুঝিতে বাকি রহিল না। আগে পিপা পিপা নারিকেল ও সরিসার তৈল পোর্টব্লেয়ার হইতে রপ্তানী হইত, এখন সে সমস্তই গুদামে পচিতে লাগিল। জেলে ঘানি চালান বন্ধ হইয়া গেল। শেষে যখন কয়েদীর নিকট হইতে নানারূপ প্রলোভন দেখাইয়া যুদ্ধের জন্য টাকা সংগ্ৰহ (war loan) করা হইতে লাগিল তখন পোর্টব্লেয়ারে গুজব রটয়া গেল যে, ইংরাজের দফা এবার রফা হইয়া গিয়াছে। জেলের দলাদলি ভাঙ্গিয়া গিয়া শত্রুমিত্ৰ সবাই মিলিয়া জৰ্ম্মানীর জয় কামনা করিয়া ঘন ঘন মালা জপিতে আরম্ভ করিল। জৰ্ম্মানীর বান্দস নাকি হুকুম দিয়াছে যে সব কয়েদীকে ছাড়িয়া দিতে হইবে! সাহেবদের আরাদালীরা আসিয়া খবর দিতে লাগিল যে আজ সাহেব সংবাদ পত্ৰ পড়িতে পড়িতে কাদিয়া ফেলিয়াছে, কাল সাহেব না খাইয়া বিছানায় মুখ গুজিয়া পড়িয়াছিল ইত্যাদি ইত্যাদি। ঝাঁকে ঝাঁকে ভবিষ্যদ্ভুক্ত জুটিয়া গেল। কৈহ বলিল পীর সাহেব স্বপ্ন দেখিয়াছেন ষে ১৯১৪ সালে ইংরেজের ভরা ডুবিবে, কেহ বলিল এ কথা ত কেতবে স্পষ্টই লেখা আছে! মোটের উপর সকাল হইতে সন্ধ্যা পৰ্যন্ত এই একই আলোচনা