পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নির্বাসিতের আত্মকথা ܘ মাইট কাটিজ রাখিয়া দেওয়া হইল ; কিন্তু উড়া ত দুরের কথ। । ট্ৰেনখানা একটু হেলিল ও না । শুধু কাটিজ ফাটার গোটা দুই ফন্টু ফন্টু আওয়াজ শূন্যে মিশাইয়া গেল, লাট সাহেবের একটু ঘুমের ব্যাঘাত পৰ্য্যন্ত হইল না । দিনকতক পরে শোনা গেল যে লাট সাহেব রাচি না কোথা হইতে কলিকাতায় স্পেসাল ট্রেণে ফিরিতেছেন । মেদিনীপুরে গিয়া নারায়ণগড় ষ্টেসনের কাছে ঘাটি আগলান হইল। বোমা বিদায় যিনি পণ্ডিত তিনি পরামর্শ দিলেন যে রেলের জোড়ের মুখের নীচে মাটির মধ্যে যেন বোমাটা পুতিয়া রাখা হয় ; তাহার পর সময় মত তাহাতে “স্লো ফিউজ” লাগাইয়া আগুন ধরাইয়া দিলেই কাৰ্য্যোদ্ধার হইবে। কিন্তু লাটসাহেবের এমনি অদৃষ্টর জোর যে বোমা পুতিবার দিন আমাদের ওস্তাদজী পড়িলেন জ্বরে, আর র্যাহারা কেল্লা ফতে করিতে ছুটলেন তাহারা একেবারে “ও রসে বঞ্চিত গোবিন্দদাস” কাজেই বোমাও ফাটল, রেলও বঁাকিল, কিন্তু গাড়ী উড়িল না। তবে ইঞ্জিন থানা নাকি জখম হইয়াছিল ; এবং খড়গপুর ষ্টেসন হইতে আর একটা ইঞ্জিন লইয়া গিয়া লাটসাহেবের স্পেসালকে টানিয়া আনিতে হয় । এই গাড়ী-ভাঙ্গা পৰ্ব্ব সাঙ্গ হইবার পর চারিদিকে গুজব রচিয়। গেল যে রুশিয়া হইতে এদেশে নিহিলিষ্টের আমদানী হইয়াছে। একদিন আমার আত্মীয় একজন বৃদ্ধ সরকারী কৰ্ম্মচারীর মুখে শুনিলাম যে, তিনি বিশ্বস্ত সুত্রে জানিতে পারিয়াছেন যে, ইউরোপ হইতে এদেশে নিহিলিষ্টরা আসিয়াছে। ঐ নিহিলিষ্ট দলের একজন যে তাহার সম্মুখে বসিয়া নিতান্ত ভাল মানুষটীর মত চা খাইতেছে একথা জানিতে পারূিলে বৃদ্ধ কি করিতেন কে জানে ? যাই হোক, পুলিসের কৰ্ত্তারা গাড়ী ভাঙ্গার আসামী ধরিবার জন্য ৫০ ০০২ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করিয়া দিলেন। সুতরাং আসামীরও অভাব হইল না। জনকত রেলের কুলিকে ধরিয়া