পাতা:নির্বাসিতের আত্মকথা - উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\ტ o নির্বাসিতের আত্মকথা পাতালের বাহির হইয়া পড়ে। ইউরোপীয় প্রহরীকে ধরাশায়ী করিয়া কানাই যখন নরেনকে খুজিতে থাকে তখন সে হাসপাতালের বাহিরে চলিয়া গিয়াছে এবং হাসপাতালের দরজা বন্ধ করিয়া দিয়া একজন প্রহরী সেখানে দাড়াইয়া আছে। কানাই তাহার বুকের কাছে পিস্তল ধরিয়া ভয় দেখায় যে নরেন কোথায় পলাইয়াছে তাহা যদি সে বলিয়া না দেয় তি তাহাকে গুলি খাইয়া মরিতে হইবে। বেচারা দরজা খুলিয়া দিয়া বলে যে নরেন অফিসের দিকে গিয়াছে। কানাই ছুটিয়া আসিতে আসিতে দূর হইতে নরেনকে দেখিতে পায় ও গুলি চালাইতে খুঁকে । গুলির শব্দ শুনিয়া জেলার, ডেপুটী জেলার, আসিষ্টাণ্ট জেলার, বড়জমাদার, ছোট জমাদার সবাই সদলবলে হাসপাতালের দিকে আসিতেছিলেন। পথের মাঝখানে কানাই এর রুদ্রমূৰ্ত্তি দেখিয়া তাহারা রণে ভঙ্গ দেওয়াই শ্ৰেয় বোধ করিলেন। কে যে কোথায় পলাইলেন তাহার ঠিক বিবরণ পাওয়া যায় না ; তবে জেলার বাবু যে র্তাহার বিপুল কলেবরের অৰ্দ্ধেকটা কারখানার একটা বেঞ্চের নীচে ঢুকাইয়া দিয়াছিলেন একথা সর্ববাদি সম্মত । এদিকে কানাইএর হাত হইতে গুলি খাইতে খাইতে নরেন। কারখানার দরজার কাছে গিয়া আছাড় খাইয়া পড়িল। কানাইয়ের গুলি যখন ফুরাইয়া গেল তখন বন্দুক কীরিচ, লাঠি । সোটা লইয়া সকলেই বাহির হইয়া আসিল এবং কানাইকে ঘিরিয়া ফেলিল । - এখন প্রশ্ন এই পিস্তল আসিল কোথা হইতে ? কয়েদীরা গুজব রটাইল । যে বাহির হইতে আমাদের জন্য যে সমস্ত ঘিয়ের টিন বা কঁঠাল আসিত তাহার মধ্যে ভরিয়া কেহ পিস্তল পাঠাইয়া দিয়া থাকিবে। কানাইলাল বলিল ক্ষুদিরামের ভুত আসিয়া তাহাকে পিস্তল দিয়া গিয়াছে। প্রেততত্ত্ববিদদের এক আধখানা বই পড়িয়াছি, কিন্তু ভূতকে পিস্তল দিয়া যাইতে