পাতা:নিশীথ-চিন্তা - কালীপ্রসন্ন বিদ্যাসাগর.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তারা আর ফুল । জ্যোতির্বিবাদ সমস্ত আকাশে সগত কোটি তারা গণিয়াছেন। এ গণনাও কিছুই 'নছে। কারণ, দূরবীক্ষণের দৃষ্টিশক্তি যতই দূরতর দূরে প্রসারিত হইতেছে, তারার সংখ্যাও ততই বৃদ্ধি পাইতেছে। পৃথিবীর উত্তরে দক্ষিণে, পূর্বে পশ্চিমে, ঈশানে নৈঋতে, বায়ু ও অগ্নিকোণে এবং উৰ্দ্ধে ও অধে সকল দিকেই অসংখ্য তারা অর্থবা অসংখ্যা” সূৰ্য্য ও অসংখ্যা সৌর-জগৎ । বিজ্ঞান অশেষবিধ পরীক্ষা ও অকাট্য গণনা দ্বারা এই সকল সিদ্ধান্তে পহুচিয়াছে । কিন্তু আমি অকৃতী অধম বিজ্ঞানের এই অভ্রান্ত সত্যানিচয়কে কিরূপে আমার ভ্ৰান্তিসঙ্গুণ ক্ষুদ্ৰ হৃদয়ে ধারণ করিব ? অামি আমার নিত্য প্ৰত্যক্ষ, নিত্যপ্ৰাণদা একটি সূৰ্য্যের আয়তন চিন্তা করিতে পারি না, এইক্ষণ কিরূপে এই অনন্ত কোটি সূৰ্য্য-পুঞ্জ-মাির অনন্ত-রাশীভূত সৌর-জগৎকে চিন্তা দ্বারা আমার চিত্তের বিশিষ্ট্রীভূত করিব ? আমি যে দিকের কথা কল্পনা করি, সেই দিকেই সূর্থের পর সূৰ্য্য, সৌর-জগতের পর সৌর-জগৎ, এবং সশস্ত সৌরজগতে অনন্ত কোটি গ্রহের পর অনন্ত কোটি গ্রত !!! আমি কোন দিকে চক্ষু মেলিয়া চাহিব ?--কোন দিকের কোন কথা চিন্তা করিতে যাইয়া অচেতনের মত পডিয়া রহিব ? হায়! আমি এই “অবাঙ মানসোগোচর” অচিন্তনীয় অনন্তের মধ্যে আমার অপ্রতিম ক্ষুদ্রতা লইয়া কোথায় গিয়া লুকাইয়া রহিব ?