(৩)
গোলোক। সাধে গিয়াছেন, প্যায়দায় লয়ে গিয়াছে।
সাধু। বড় বাবুর কিন্তু ভ্যালা সাহস। সে দিনে সাহেব বল্লে “যদি তুমি আমিন খালাসির কথা না শোনো, আর চিহ্নিত জমিতে নীল না কর, তবে তোমার বাড়ি উঠাইয়ে বেত্রবতীর জলে ফেলাইয়া দিব এবং তোমারে কুটির গুদামে ধান খাওয়াইব” তাহাতে বড়বাবু কহিলেন “আমার গত সনের ৫০ বিঘা নীলের দাম চুকায়ে না দিলে এ বৎসর এক বিঘাও নীল করিব না, এতে প্রাণ পর্য্যন্ত পণ, বাড়ি কি ছার”!!
গোলোক। তা না বলেই বা করে কি। দেখ দেখি, পঞ্চাশ বিঘা ধান হইলে আমার সংসারের কিছু কি ভাবনা থাক্তো। তাই যদি নীলের দাম গুণো চুক্য়ে দেয় তবু অনেক কষ্ট নিবারণ হয়।
কি বাবা, কি করে এলে?
নবীন। আজ্ঞে, জননীর পরিতাপ বিবেচনা কর্যে কি কালসর্প ক্রোড়স্থ শিশুকে দংশন করিতে সঙ্কুচিত হয়? আমি অনেক স্তুতিবাদ করিলাম, তা তিনি কিছুই বুঝিলেন না। সাহেবের সেই কথা, তিনি বলেন ৫০ টাকা লইয়া ৬০ বিঘা নীলের লেখাপড়া করিয়া দাও, পরে একেবারে দুইসনের হিসাব চুকাইয়ে দেওয়া যাবে।
গোলোক। ৬০ বিঘা নীল কত্তে হলে অন্য ফসলে হাত দিতে হবে না। অন্ন বিনাই মারা যেতে হলো।
নবীন। আমি বলিলাম, সাহেব, আমাদিগের লোকজন লাঙ্গল গোরু সকলি আপনি নীলের জমিতে নিযুক্ত করে রাখুন, কেবল আমাদিগের সম্বৎসরের আহার দিবেন