পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী

প্রত্যেক ভারতবাসীকে তাঁহার নিজের পথপ্রদর্শক হইয়া যে বন্ধুর পথের কোথাও বিশ্রামের স্থান নাই এবং ভারতবর্ষের মুক্তি এবং স্বাধীনতা অর্জ্জনের পর যে পথের অবসান হইয়াছে সেই পথ দিয়া অগ্রসর হইতে হইবে।

 স্বাধীন ভারতবর্ষের ভারত-শাসন-ব্যবস্থা কিরূপে হইবে সে সম্বন্ধে নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতি তাহার নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করিবার পর উপসংহারে সুস্পষ্টভাবে সকলকে এই কথা জানাইয়া দিতে চাহেন যে, গণ-আন্দোলন আরম্ভ করিয়া ইহার কংগ্রেসের জন্য ক্ষমতা লাভ করিবার কোন উদ্দেশ্য নাই। ক্ষমতা যখন হস্তগত হইবে, তখন ইহা ভারতবর্ষের সমস্ত জনসাধারণের হাতেই থাকিবে।”

 এই প্রস্তাব গৃহীত হইবার পর ৯ই আগষ্ট সরকার বাহাদুর মহাত্মা গান্ধীকে, কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির ও সদস্যগণকে এবং প্রত্যেক প্রদেশের বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতাদের গ্রেপ্তার করে। সমগ্র ভারতে সমস্ত কংগ্রেস প্রতিষ্ঠানগুলিকে বে-আইনী ঘোষণা করা হয়। ইহার ফলে সমস্ত দেশব্যাপী এক বিরাট আন্তর্বিপ্লব দেখা দেয়। সিপাহী বিদ্রোহের পর এইরূপ ব্যাপক বিদ্রোহ ভারতে আর হয় নাই। এই বিপ্লবের কোন নেতা ছিল না, কোন পরিকল্পনা বা নির্দেশ ছিল না, ইহাতে কোন সৈন্য ছিল না, কোন অস্ত্রশস্ত্র ছিল না। ইহা স্বতঃ স্ফূর্ত গণ-আন্দোলন। বহুলোক এই আন্দোলনে স্বেচ্ছায় যোগদান করে। মনে রাখিতে হইবে প্রথমে জনসাধারণ অহিংস উপায়ে “ভারত ছাড়” আন্দোলন করে। কিন্তু গভর্ণমেণ্ট অহিংস আন্দোলনকে হিংস উপায়ে প্রতিরোধ করেন। তখন জনসাধারণ অহিংস উপায় পরিত্যাগ করিয়া স্থানে স্থানে হিংস উপায় অবলম্বন করে। ভারতের বহুস্থানে রেলওয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। টেলিগ্রাফের টেলিফোনের ও বৈদ্যুতিক