পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
২১

সহসা তাহাতে এক বিঘ্ন আসিয়া পড়িল। কর্পোরেশনের উন্নতিমূলক কার্য্যে তিনি আর বেশীদিন আত্মনিয়োগ করিতে পারিলেন না। ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের ২৫শে অক্টোবর তারিখে ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের বঙ্গীয় ফৌজদারী আইন-সংশোধন অর্ডিন্যান্স অনুসারে সুভাষচন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হইল।

 এই প্রসঙ্গে শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত লিধিয়াছেন—

 “গর্ব্বিত ধনবানের হস্ত হইতে সমবেদনাময় সেবক-সম্প্রদায়ের হস্তেই কর্পোরেশন আসিয়া পড়িত; গরিবের সেবা হইত, মাছ দুগ্ধ খাইয়া কলিকাতার লোক বাঁচিত, বিষাক্ত তৈল ও ঘৃতের সহায়তায় ডিস পেপ সিয়া চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করিতে পারিত না, কিন্তু সব বিফল হইল! সুভাষচন্দ্র অমাত্য-তন্ত্রের কবলে নিপতিত হইলেন।” —দেশবন্ধু-স্মৃতি, পৃঃ ৩৫১

 সুভাষচন্দ্রের গ্রেপ্তারে সমগ্র দেশে একটা সাড়া পড়িয়া গেল। সুভাষচন্দ্রকে গ্রেপ্তার এবং বিনা বিচারে কারারুদ্ধ করায় কলিকাতা কর্পোরেশনের ২৯শে অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সভায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন কলিকাতার মেয়র-রূপে নিম্নলিখিত ভাষায় গভর্ণমেণ্টের এই কার্য্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন—

 “স্বদেশকে ভালবাসা যদি অপরাধ হয়, তবে আমিও অপরাধী। যদি সুভাষচন্দ্র বসু অপরাধী হন, তবে আমিও অপরাধী—কর্পোরেশনের শুধু প্রধান কর্ম্ম-সচিব নহে, মেয়রও সমভাবে অপরাধী।”[১]

  1. “If love of country is crime, I am a criminal. If Mr. Subhas Chandra Bose is a criminal,—l am a criminal, —not only the Chief Executive Officer of the Corporation, but the Mayor of this Corporation is equally guilty.”
    The Calcutta Municipal Gasette, Vol. XLII, No. 16, P. 442.