সহসা তাহাতে এক বিঘ্ন আসিয়া পড়িল। কর্পোরেশনের উন্নতিমূলক কার্য্যে তিনি আর বেশীদিন আত্মনিয়োগ করিতে পারিলেন না। ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের ২৫শে অক্টোবর তারিখে ১৯২৪ খৃষ্টাব্দের বঙ্গীয় ফৌজদারী আইন-সংশোধন অর্ডিন্যান্স অনুসারে সুভাষচন্দ্রকে গ্রেপ্তার করা হইল।
এই প্রসঙ্গে শ্রীযুক্ত হেমেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত লিধিয়াছেন—
“গর্ব্বিত ধনবানের হস্ত হইতে সমবেদনাময় সেবক-সম্প্রদায়ের হস্তেই কর্পোরেশন আসিয়া পড়িত; গরিবের সেবা হইত, মাছ দুগ্ধ খাইয়া কলিকাতার লোক বাঁচিত, বিষাক্ত তৈল ও ঘৃতের সহায়তায় ডিস পেপ সিয়া চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করিতে পারিত না, কিন্তু সব বিফল হইল! সুভাষচন্দ্র অমাত্য-তন্ত্রের কবলে নিপতিত হইলেন।” —দেশবন্ধু-স্মৃতি, পৃঃ ৩৫১
সুভাষচন্দ্রের গ্রেপ্তারে সমগ্র দেশে একটা সাড়া পড়িয়া গেল। সুভাষচন্দ্রকে গ্রেপ্তার এবং বিনা বিচারে কারারুদ্ধ করায় কলিকাতা কর্পোরেশনের ২৯শে অক্টোবরে অনুষ্ঠিত সভায় দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন কলিকাতার মেয়র-রূপে নিম্নলিখিত ভাষায় গভর্ণমেণ্টের এই কার্য্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন—
“স্বদেশকে ভালবাসা যদি অপরাধ হয়, তবে আমিও অপরাধী। যদি সুভাষচন্দ্র বসু অপরাধী হন, তবে আমিও অপরাধী—কর্পোরেশনের শুধু প্রধান কর্ম্ম-সচিব নহে, মেয়রও সমভাবে অপরাধী।”[১]
- ↑ “If love of country is crime, I am a criminal. If Mr. Subhas Chandra Bose is a criminal,—l am a criminal, —not only the Chief Executive Officer of the Corporation, but the Mayor of this Corporation is equally guilty.”
—The Calcutta Municipal Gasette, Vol. XLII, No. 16, P. 442.