বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
নেপালে বঙ্গনারী।

দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করিয়া কত লােকের আশীর্ব্বাদভাজন হইয়াছেন, কত অপরাধীর কারাবাস-দুঃখ মোচন করিয়াছেন। দেশের অর্থ অপহরণের অপরাধে দণ্ডিত জনৈক সুবাকে পঁচিশ হাজার টাকা দিয়া জল্লাদের হস্ত হইতে রক্ষা করেন। হিন্দু শাস্ত্রে যে সকল ক্রিয়াকর্ম্মে পুণ্যসঞ্চয় হয় বলিয়া নির্দিষ্ট আছে, তাহার কিছুই তিনি অননুষ্ঠিত রাখেন নাই। রােগশয্যায় পড়িয়া শাস্ত্রকথা শ্রবণে তিনি কত সময় অতিবাহিত করিতেন। তাঁহার মত নারী পৃথিবীতে অতি অল্পই জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এই বিশাল নেপাল রাজ্যের প্রধান রমণী ছিলেন; কিন্তু তাঁহার আত্মীয় স্বজন ও দূরাগত বিদেশী যাহারা তাঁহার সংস্পর্শে আসিত, তাঁহারাই তাঁহার সৌজন্য, দয়া, মিষ্টভাষিতা প্রভৃতি গুণে মােহিত হইত। তিনি অতিশয় দূরদর্শিনী বুদ্ধিমতী রমণী ছিলেন; তাঁহার প্রত্যেক কার্য্য সুবুদ্ধি এবং সদ্বিবেচনার পরিচয় দিত। মহৎ প্রকৃতিই স্বীয় মহত্ত্ব উপলব্ধি করিতে পারে। তিনি সম্পূর্ণরূপে আপনার উচ্চ পদের গৌরব রক্ষা করিয়া গিয়াছেন। শুধু পদের গৌরব রক্ষা কেন, তিনি স্বীয় পদের গৌরব বৃদ্ধিও করিয়া গিয়াছেন। এরূপ নারীরত্ন শুধূ এদেশের কেন, সমস্ত হিন্দুরমণীর গৌরবস্থল। সমগ্র নারীমণ্ডলী তাঁহার দৃষ্টান্তে পতিভক্তি, পতিসেবা, গুরুভক্তি, সন্তানের শিক্ষা, প্রজাপালন প্রভৃতি সকল গুণই শিক্ষা করিতে পারে।

 এই দুর্ভেদ্য গিরি প্রদেশে, রাজান্তঃপুরে, নরচক্ষুর অগােচরে