পাতা:নৈবেদ্য - জলধর সেন.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৈবেদ্য অনন্ত বিপদ; ভদ্রলোকের উপযোগী কোন জীবিকা অবলম্বন করিবার ক্ষমতা নাই, কোন নীচ কাজ করাও বিশেষ অগৌরবের। পিতা সামান্য তহশিলদারী করিতেন ; মা আমার লক্ষ্মী ছিলেন। তঁহার গুণে পিতার সামান্য উপার্জনেও আমরা কোন দিন অল্পকষ্ট সহ্যু করি নাই। পল্লীগ্রামের পিতার কুপোষ্য, নিষ্কৰ্ম্মা, আডিডাপ্রিয় লোকের মত আমিও নির্ভাবনায় আড্ডায় আড়ায় ঘুরিয়া বেড়াইতাম ; বৃদ্ধ পিতা মাথার ঘাম পায়ে ফেলিয়া পরিবার প্রতিপালন করিতেন । মেহাধিক্য বশতঃ তিনি আমাকে কোন দিন। তঁহার দুঃখ-কষ্টের কথা বলেন নাই-ঘরে আমি যে একমাত্ৰ সন্তান। হতভাগ্যের সুখ বুঝি বিধাতার সহ হয় না। একটি স্নেহমুগ্ধ, নিৰ্বোধি বালকের অজ্ঞতা-জনিত সুখও তাহার সহ্য হইল না , বিধাতারই বা দোষ দিই কেন ? নিজের অদৃষ্টের বিড়ম্বন। ষোল বৎসর যখন বয়স তখন ওলাউঠারোগে মাতৃদেবী আমাদের ছাড়িয়া গেলেন। কষ্ট কি, সেই দিন প্ৰথম জানিতে পারিলাম। সেই কষ্টের আরম্ভ-তাহার পর নদীতরঙ্গের মত কষ্টের উপর কষ্টের প্রবাহ আসিতেছে ; শুষ্ক, জীর্ণ লঘু তৃণের মত আমি ভাসিয়া চলিতেছি। জানি না। এ কষ্টের, এ নিদারুণ দুঃখ-দারিদ্র্যের অবসান কোথায় ? বলিয়াছি বাবার বয়স হইয়াছিল। এ দুর্ভাগ্য বাঙ্গালা দেশে তাহার মত পককেশ, জরাজীর্ণ বৃদ্ধের হস্তে কন্যা-সম্প্রদান করিবার আগ্ৰহ রাখে, এমন কায়স্থ-সন্তানের অভাব নাই। আমার মাতৃবিয়োগে বাবা বড় কাতর হইয়াছিলেন ; তঁহার সংসারে বিরাগ জন্মিয়াছিল ; তাই শুভানুধ্যায়ী বন্ধুগণের পরামর্শসত্ত্বেও একটি বালিকার ইহপরকাল নষ্ট করিতে র্তাহার প্রবৃত্তি হইল না; কিন্তু ঘরে একটিও স্ত্রীলোক না থাকায় সংসার প্রায় অচল হইয়া উঠিল ; সুতরাং গৃহ সচল করিবার উদ্দেশ্যে তিনি এক R