বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পওহারী বাবা.djvu/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১২
পওহারী বাবা

 এইরূপে প্রাচীন ধরণের ভারতীয় ছাত্রজীবনের দৈনন্দিন কার্য্যের ভিতর দিয়া ভাবী মহাত্মার বাল্যজীবন কাটিতে লাগিল; আর তাঁহার অধ্যয়নে অসাধারণ অনুরাগ ও ভাষাশিক্ষায় অপূর্ব্ব পটুতা ব্যতীত সেই সরল, সদানন্দময়, ক্রীড়াশীল ছাত্রজীবনে এরূপ কিছু পরিচয় পাওয়া যায় নাই, যাহাতে তাঁহার ভবিষ্যৎ জীবনের সেই প্রবল গাম্ভীর্য্য সূচিত করিবে—যাহার চুড়ান্ত পরিণাম এক অত্যদ্ভুত ও ভয়ানক আত্মাহুতি—যখন সকলের নিকটই উহা কেবল অতীতের এক কিম্বদন্তীস্বরূপ হইয়া দাঁড়াইয়াছিল।

 এই সময়ে এমন এক ঘটনা ঘটিল, যাহতে এই অধ্যয়নশীল যুবক সম্ভবতঃ এই প্রথম জীবনের গভীর মর্ম্ম প্রাণে প্রাণে বুঝিল; এতদিন তাহার যে দৃষ্টি পুস্তক-নিবন্ধ ছিল, তখন তাহা উঠাইয়া সে নিজ মনোজগৎ তন্ন তন্ন ভাবে পর্য্যবেক্ষণ করিতে লাগিল; ধর্ম্মের মধ্যে পুঁথিগত বিদ্যা ছাড়া যথার্থ সত্য কিছু আছে কি না, তাহা জানিবার জন্য তাহার প্রাণ ব্যাকুল হইল—তাহার পিতৃব্যের দেহত্যাগ হইল। যে এক মুখের দিকে চাহিয়া সে জীবন ধারণ করিত, যাঁহার উপর এই যুবক-হৃদয়ের সমুদয় ভালবাসা নিবন্ধ ছিল, তিনি চলিয়া গেলেন; তখন সেই উদ্দাম যুবক হৃদয়ের অন্তস্তলে শোকাহত হইয়া ঐ শূন্যস্থান পূরণ করিবার জন্য এমন বস্তুর অন্বেষণে দৃঢ়সঙ্কল্প হইল, যাহার কখন পরিণাম নাই।

 ভারতে সকল বিষয়ের জন্যই আমাদের গুরুর প্রয়োজন হয়।