পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আবার ইতিহাস

 পুরু সগর্বে মাথা তুলে বললেন, “এক রাজা আর এক রাজার সঙ্গে যেমন ব্যবহার করেন!”

 পুরুর বীরত্ব ও পরাক্রম দেখে আলেকজাণ্ডার এতটা অভিভূত হয়েছিলেন যে, তিনি কেবল তাঁকে মুক্তি দিলেন না, তাঁর নিজের রাজ্যের উপরেও আরো অনেক দেশ দান করলেন।

 পঞ্চনদের তীরে উড়তে লাগল গ্রীক দিগ্বিজয়ীর পতাকা! কিন্তু আলেকজাণ্ডার বুঝলেন, তিনি এখনো বৃহত্তর ভারতসীমান্তেই দাঁড়িয়ে আছেন ৷

 যুদ্ধজয়ের আনন্দোচ্ছ্বাস যখন কমল’, আলেকজাণ্ডার একদিন সেনাপতিদের আহ্বান ক’রে বললেন, “সৈন্যদের মধ্যে প্রচার ক’রে দাও, আমি এইবারে মগধের দিকে যাত্রা করবো!”

 গ্রীক অশ্বারোহী সৈন্যদের নেতা স্পষ্টবক্তা কইনোস্ সবিস্ময়ে বললেন, “সে কি সম্রাট! আজ আট বৎসর হ’ল আমরা স্বদেশ থেকে বেরিয়েছি। এখনে। আপনি এগিয়ে যেতে চান?”

 —“হাঁ সেনাপতি! কারণ মগধের রাজাই হচ্ছেন ভারতের সবচেয়ে বড় রাজা। মগধ জয় করতে না পারলে ভারত জয় করা হবে না।”

 অন্যান্য সেনাপতিরাও জানালেন, গ্রীক সৈন্যদের অধিকাংশই হত বা আহত হয়েছে। এখন আর আমাদের মগধের দিকে যাবার সাহস নেই। এর মধ্যেই গ্রীক সৈন্যদের মধ্যে বিদ্রোহের ভাব প্রকাশ পেয়েছে।

 কইনোস্ বললেন, “শুনেছি মগধের নন্দ-রাজার সৈন্য আছে লক্ষ লক্ষ। মগধ আক্রমণ করলে আমাদের পরাজয় অনিবার্য।”

 আলেকজাণ্ডার আর কোনো কথা না বলে অভিমানভরে চ’লে গেলেন। দুই দিন আর শিবিরের ভিতর থেকে বেরুলেন না।

৭৯