কালচক্র। কয়েক মিনিট পয়ে দুইজন দসু্য সেইস্থানে ফিরিয়া আসিল এবং বালিকাকে লইয়া পূর্ববৎ গন্তব্যস্থানে প্ৰস্থান করিল। রাত্রি প্রায় নয়টা। হায়! এই জনশূন্য নিবিড় অরণ্যে হতভাগ্যদিগকে সাহায্য করিবার কেহই নাই । রবীন্দ্ৰনাথের মনে বারম্বার এই প্রশ্নের উদয় হইতে লাগিল। তঁহার নিজেরও কোন সামর্থ্য নাই । চীৎকার তুললে নিকটবত্তী গ্ৰাম হইতে যে কোন ব্যক্তি সাহায্য করিতে gh অদ্ভুর হইবে, সে আশাও খুব কম। রবীন্দ্রনাথ চিন্তা করিতে লাগিলেন। }কৈ বন্ধন্যন্ত্রণা ও দুরাচারগণের নিদারুণ প্ৰহারে বৃদ্ধ মৃতপ্রায়, সংজ্ঞা শুন্য ; অন্যদিকে ক্ষুৎপিপাসাকাতর শিশু কিয়ৎক্ষণ রোদন করিয়া মৃত্যুবৎ, নিশ্চল নিস্তব্ধ ভাবে পড়িয়া আছে। মানুষের পক্ষে এরূপ লোমহর্ষণ ব্যাপার দেখিয়া নিশ্চিন্ত হইয়া থাকা একেবারে অসম্ভব। রবীন্দ্রনাথ নিজের বন্ধন মোচন করিবার জন্য সচেষ্ট হইলেন। দুৰ্ব্বত্তেরা রবীন্দ্ৰকে লতাপাশে বন্ধন করিয়াছিল ; তিনি অতিকষ্টে পদদ্বয়ের বন্ধন বৃক্ষমূলে ঘর্ষণ করিয়া ছিন্ন করিলেন এবং এই প্রকারে হস্তের বন্ধনও মোচন করিলেন। সত্বর উঠিয়া বৃদ্ধিকেও বন্ধনমুক্ত করিলেন। কিন্তু বৃদ্ধ তখনও সংজ্ঞাহীন। অনন্যেপায় হইয়া রবীন্দ্ৰ জল আনিবার জন্য জলাশয়ের অন্বেষণে ছুটলেন। সৌভাগ্যক্রমে তঁহাকে অধিক দূর যাইতে হইল না ; কিয়দার যাইতে না যাইতে সেই অরণ্যমধ্যে একটী ক্ষুদ্র জলাশয় দেখিতে পাইলেন। কিন্তু জল আনয়নের উপযোগী কোন পাত্ৰ র্তাহার সঙ্গে ছিল না । সম্বলের মধ্যে র্তাহার পরিধেয় সেই জীর্ণবস্তুখণ্ড । রবীন্দ্ৰ সেই বস্ত্রখণ্ডের কিয়দংশ ভিজাইলেন এবং বটপত্রের একটা ঠোঙ্গা প্ৰস্তুত করিয়া তাহাও সলিলপূর্ণ করিলেন। উক্ত প্রক্রিয়ায় সলিল আনয়ন २७ ]